বন্দুক হামলাস্থল টেক্সাস-ওহাইও পরিদর্শনের পথে ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প টেক্সাস ও ওহাইওয় অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে রওনা হয়েছেন। সেখানে তিনি বিক্ষোভকারীদের বাধার মুখে পড়তে পারেন।

>>রয়টার্স
Published : 7 August 2019, 05:22 PM
Updated : 7 August 2019, 05:22 PM

এ দু’টি অঙ্গরাজ্যে তিনদিন আগে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে বন্দুকধারীর এলোপাতাড়ি গুলিতে ৩১ জন নিহত হয়।

ওই দুই হামলার পর ফের দেশটির শিথিল অস্ত্র আইন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং অভিবাসন নিয়ে ট্রাম্পের বিদ্বেষমূলক অবস্থানকেও দায়ী করেছেন অনেকে।

ট্রাম্পের পূর্বসূরি বারাক ওবামা তার দুই মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রে আরো কঠোর অস্ত্র আইন প্রনয়নের চেষ্টা করে কয়েক দফা ব্যর্থ হন। অন্যদিকে, ট্রাম্প নিজে কঠোর অস্ত্র আইন প্রনয়নের বিপক্ষে।

টেক্সাস ও ওহাইও পরিদর্শনের জন্য বুধবার হোয়াইট হাউজ থেকে বের হওয়ার সময় ট্রাম্পকে অ্যাসল্ট রাইফেল নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছেন কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি তা উড়িয়ে দেন।

ট্রাম্প বলেন, অস্ত্র বিক্রির আগে ক্রেতার অতীত যাচাই করে নেওয়ার উপর তিনি আরো জোর দিতে চান। এবং ক্রেতা ‍মানসিকভাবে সুস্থ কিনা সেটাও অবশ্যই নিশ্চিত হতে বলেন।

“আমি আপনাদের বলতে পারি, এই মুহূর্তে রাজনৈতিকভাবে এমন কোনো দাবি নেই। তবে আমি অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব... এ বিষয়ে বেশকিছু দাবি আছে এবং আমি বলতে চাই বেশ শক্ত দাবি...তা হল অতীত যাচাই করে নেওয়া।”

বুধবার প্রথমে ওহাইও যাবেন ট্রাম্প। সেখানে গত রোববার ভোররাতের দিকে একটি পানশালার বাইরে এক ব্যক্তি গুলি করে নয়জনকে হত্যা করে। পরে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে হত্যা করে।

তার ‍মাত্র ১৩ ঘণ্টা আগে শনিবার টেক্সাসের এল পাসো শহরে ওয়ালমার্টের শোরুমে এক তরুণ গুলি করে ২২ জনকে হত্যা করে। পুলিশ ওই তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে।

অভিবাসীদের প্রতি ঘৃণা এবং শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদ থেকেই এল পাসো হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিকভাব ধারণা করছে পুলিশ।

ট্রাম্প নিজেও অভিবাসন বিরোধী। ক্ষমতায় আসার পর অভিবাসীদের বিরুদ্ধে তিনি বেশ কিছু নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন।

রোববারের হামলার পর ওহাইওর ডেটনে বিক্ষোভ হয়েছে। তারা ওহাইওর রিপাবলিকান গভর্নর মাইক ডেওয়াইনের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে বলেছে ‘কিছু করুন’।

অন্যদিকে, ডেটনের মেয়র ডেমোক্রেটিক নেতা নান হোয়েইল মঙ্গলবার বলেন, তিনি রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানাবেন।

“তিনি পুলিশ, উদ্ধারকর্মী ও বেঁচে যাওয়াদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছেন। একইসঙ্গে আমি তাকে বলবো, আপনি বন্দুক হাতে নৃশংসতার বিষয়ে কতটা অসযোগিতা করছেন।”

ডেমোক্রেটদের অভিযোগ, ট্রাম্প মানসিক অসুস্থতা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাবের কথা বলে বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইছেন। যেখানে তার উচিত অস্ত্র আইন আরো কঠোর করা। যাতে অস্ত্র কেনার উপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা যায় এবং অ্যাসল্ট রাইফেলের মতো বিভিন্ন মারাত্মক অস্ত্র যেগুলো বর্তমান আইনে ক্রয় ও বহন বৈধ তার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যায়।

আইওয়ার ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন বলেন, “আমদের বিষাক্ত জিহ্বার একজন প্রেসিডেন্ট আছেন যিনি জনসম্মুখে এবং কোনো অপরাধবোধ ছাড়াই ঘৃণা, বিদ্বেষ ও বিভেদের রাজনৈতিক কৌশলকে আলিঙ্গন করেছেন।” 

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বাড়তে থাকা বন্দুক হামলার ঘটনা জনমনে ভয়াবহ আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। মঙ্গলবার রাতে নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কায়ারে হঠাৎ করে একটি মটরসাইকেলের হোসপাইপে গুলির মত আওয়াজ হলে সেখানে উপস্থিত জনতা পাগলের মত দৌড়াতে শুরু করে।

পরে সিএনএন’কে নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো বলেন, “নিশ্চিতভাবেই লোকজন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।”