হংকংয়ে বিক্ষোভ চলছেই, বেইজিংকে কঠোর হওয়ার আহ্বান চীনা গণমাধ্যমে

সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সহিংস সংঘর্ষের পরদিনও হংকংয়ের সড়কগুলোতে হাজারো মানুষ জড়ো হয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 August 2019, 10:44 AM
Updated : 4 August 2019, 10:49 AM

কালো পোশাক পরে, রঙবেরঙের ব্যানার, লিফলেট ও স্লোগানের মাধ্যমে তারা সিউং কোয়ান’ও এলাকায় শহরজুড়ে ডাকা সোমবারের ধর্মঘটের প্রচারণাও চালাচ্ছেন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এদিকে রোববার চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে হংকংয়ের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেইজিংকে কঠোর হওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিচারের জন্য বাসিন্দাদের চীনের মূল ভূখণ্ডে পাঠানোর সুযোগ রেখে আইন সংশোধনে আনা বিলের প্রতিবাদে গত কয়েক মাস ধরেই হংকং অস্থির।

সর্বশেষ শনিবার শহরের কোলুন এলাকায় কালো মুখোশ পরিহিত একদল বিক্ষোভকারী থানার বাইরে বিভিন্ন সড়কে ও আবর্জনা রাখার বাক্সে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা হংকংয়ের সঙ্গে কোলুনের সংযোগ রক্ষাকারী ক্রস-হারবার টানেলটিও অবরোধ করে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয়। বেআইনি সমাবেশ ও হামলার অভিযোগে পুলিশ পরে ২০ জনকে আটক করার কথাও জানিয়েছে।

১৯৯৭ সালে ব্রিটিশদের থেকে চীনের কাছে হস্তান্তরের পর হংকংয়ের ইতিহাসে গত কয়েক মাসের এ প্রতিবাদকেই সবচেয়ে বড় বলা হচ্ছে।

চীনের কাছে হস্তান্তরের সময় যুক্তরাজ্য শহরটির স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতা এবং স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা অটুট রাখার প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিয়েছিল।

হংকংয়ের কারণেই চীনকে ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থাপনার’ নীতিতে চলতে হচ্ছে।

যুক্তরাজ্যকে প্রতিশ্রুতি দিলেও নিজেদের ভূখণ্ডভুক্ত হওয়ার পর থেকেই বেইজিং হংকংয়ের গণতান্ত্রিক সংস্কারে বাধা, স্থানীয় নির্বাচনে হস্তক্ষেপ ও বিরোধীদের ওপর তুমুল দমন-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ সমালোচকদের।

চীন শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

প্রস্তাবিত ওই বিলের মাধ্যমে বেইজিং হংকংয়ের ওপর তার প্রভাব বাড়ানোর আরও সুযোগ পাবে বলে দাবি সমালোচকদের।

টানা আন্দোলনের মুখে অবশ্য কয়েক সপ্তাহ আগেই ওই বিলটি পাসের পরিকল্পনা থেকে হংকংয়ের চীনঘনিষ্ঠ সরকার সরে এসেছে।

কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শুক্রবার হাজারেরও বেশি সরকারি কর্মচারীও বিক্ষোভে যোগ দেন।

বিক্ষোভকারীরা এখন পুলিশের সহিংসতার বিচার দাবি ও শহরটির প্রধান নির্বাহী ক্যারি লামের পদত্যাগ চাইছেন।

হংকংয়ের এ বিক্ষোভ ও সহিংসতাকে ‘বিদেশি শক্তির ইন্ধন’ হিসেবে দেখার কথা আগেই জানিয়েছিল চীনের গণমাধ্যমগুলো।

রোববার দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া বিক্ষোভ দমনে কঠোর হতে সরকারকে পরামর্শও দিয়েছে।

“কেন্দ্রীয় সরকার অলস বসে থেকে পরিস্থিতিকে এভাবে চলতে দিতে পারে না। হংকং তার সামনের প্রতিবন্ধকতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম হবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি,” বলেছে তারা।