নতুন আইএনএফ চুক্তি হলে তাতে চীনকেও রাখতে চান ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে নতুন কোনো পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি হলে যুক্তরাষ্ট্র তাতে চীনকেও রাখতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 August 2019, 04:59 AM
Updated : 3 August 2019, 06:47 AM

এ নিয়ে দেশ দুটির সঙ্গে কথা হয়েছে, তারাও ‘খুবই উত্তেজিত’, বলেছেন তিনি।

শুক্রবার ওয়াশিংটন আনুষ্ঠানিকভাবে ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস (আইএনএফ) চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার পর ট্রাম্প নতুন চুক্তি স্বাক্ষরে এ আশাবাদ শোনালেন, জানিয়েছে বিবিসি।

ইউরোপে রাখা ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র সরিয়ে নিতে ১৯৮৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়ার মধ্যে এ আইএনএফ চুক্তিটি হয়েছিল।

চুক্তিতে ইউরোপে ৫০০ কিলোমিটার থেকে পাঁচ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সক্ষম এমন স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনেও মস্কো ও ওয়াশিংটনের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল।

শুক্রবারের পর থেকে কোনো পক্ষরই আর চুক্তিটি মেনে চলার বাধ্যবাধকতা না থাকায় বিশ্বজুড়ে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বাড়বে বলে পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সব পক্ষকে আন্তর্জাতিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে নতুন কোনো পথে সমঝোতার ভিত্তিতে একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশ্বজুড়ে অস্ত্র প্রতিযোগিতা কীভাবে রুখবেন, শুক্রবার সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, রাশিয়ার সঙ্গে নতুন একটি পরমাণু চুক্তি নিয়ে তার প্রশাসনের কথা চলছে।

“তারা কিছু জায়গা থেকে সরে আসবে, আমরাও সরবো। কোনো কোনো ক্ষেত্রে চীনকেও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত,” বলেছেন তিনি।

পরমাণুবাহী ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কোনো চুক্তি হলে তা ‘বিশ্বের জন্য ভালো কিছুই হবে’ মন্তব্য করে এজন্য সব পক্ষই মুখিয়ে আছে বলেও ধারণা তার।

“চুক্তির কথায় চীন খুবই উত্তেজিত, রাশিয়াও। আমার ধারণা আমরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে চুক্তি করতে পারবো,” বলেছেন তিনি।

মস্কো নতুন ধরনের একটি ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন ও এর উন্নয়নে কাজ করছে অভিযোগ করে যুক্তরাষ্ট্র চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই আইএনএফ চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার কথা জানায়।

আনুষ্ঠানিকভাবে সরে যাওয়ার আগে ৬ মাসের সময়সীমাও বেধে দেয় তারা। রাশিয়া অবশ্য ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার পরপরই চুক্তি বাস্তবায়নে যেসব বাধ্যবাধকতা ছিল, সেখান থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাশিয়ার নতুন ক্ষেপণাস্ত্র নভোতর ৯এম৭২৯ (নেটোর কাছে এটি এসএসসি-৮ নামে পরিচিত) আইএনএফ চুক্তিটি লংঘন করছে বলে বারবারই অভিযোগ করেছে নেটো। মস্কো প্রথম থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

গত মাসে নেটো মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ বিবিসিকে বলেছিলেন, রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম, সহজে বহনযোগ্য, রাডার ফাঁকি দিতে ওস্তাদ এবং ইউরোপের যেকোনো শহরে কয়েক মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যেতে সক্ষম।

“আমাদেরকে আইএনএফ চুক্তিবিহীন অবস্থার জন্য এবং রাশিয়া থেকে ছুটে আসা আরো অনেক বেশি ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য অবশ্যই প্রস্তুত হতে হবে,” বলেছিলেন তিনি।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের আইএনএফ চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর রাশিয়ার এক সেনা বিশেষজ্ঞ সাংবাদিকদের বলেছেন, “ওই চুক্তি আর নেই। পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয় আমরা তা দেখার এবং নতুন অস্ত্রের উন্নয়নের অপেক্ষায় আছি।”

“রাশিয়া সবদিক দিয়েই প্রস্তুত,” বলেছেন তিনি।