মার্কিন নির্বাচন ২০২০: স্বাস্থ্যসেবা ও অভিবাসন নিয়ে বিতর্কে ডেমোক্রেট মনোনয়নপ্রত্যাশীরা

যুক্তরাষ্ট্রে আগামী বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের একাংশের বিতর্কে দলের মধ্যে নির্বাচনে জয়ের নীতি কি হবে, তা নিয়ে গভীর বিরোধের চিত্র ফুটে উঠেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 July 2019, 10:27 AM
Updated : 31 July 2019, 10:27 AM

মঙ্গলবার রাতের বিতর্কে অংশ নেওয়া উদারপন্থি দুই মনোনয়নপ্রত্যাশী বার্নি স্যান্ডার্স ও এলিজাবেথ ওয়ারেনকে তাদের মধ্যপন্থি সহকর্মীরা কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

মিশিগানের ডেট্রয়েটের মঞ্চে তিন নারী ও ৭ পুরুষ প্রতিদ্বন্দ্বী একে অপরের সঙ্গে ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্যসেবা ও অভিবাসন নীতি এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে হারানোর কৌশল নিয়ে তর্কে জড়িয়েছেন।

জো বাইডেন ও কমলা হ্যারিসসহ মনোনয়নপ্রত্যাশী বাকি ১০ জনের বিতর্ক হবে বুধবার।

বিভিন্ন রাজ্যে প্রাইমারি ও ককাস শেষে আগামী বছরের জুলাইয়ের দলীয় কনভেনশনে প্রার্থী চূড়ান্ত করবে ডেমোক্রেটরা। নভেম্বরে হবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, সেখানেই ঠিক হবে পরবর্তী চার বছর কার ঠিকানা হবে হোয়াইট হাউস।

মঙ্গলবারে বিতর্কে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের অনেকেই তাদের আলোচনার শুরুতে স্যান্ডার্স ও ওয়ারেনের বিভিন্ন  নীতিকে ‘অবাস্তব’ অ্যাখ্যা দিয়ে এসব নীতি ট্রাম্পকে হারানোর জন্য উপযুক্ত হবে না বলে মন্তব্য করেন।

এদিন ডেট্রয়েটের মঞ্চে ম্যাসাচুসেটস ও ভারমন্টের দুই সিনেটর ছাড়াও ডেমোক্রেট মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন ইন্ডিয়ানার সাউথ বেন্ডের মেয়র পিট বুটিগিগ, টেক্সাসের সাবেক কংগ্রেস সদস্য বেটো ও’রোরকে, মিনেসোটার সিনেটর অ্যামি ক্লবুচার, ওহাইওর কংগ্রেস সদস্য টিম রায়ান, মেরিল্যান্ডের সাবেক কংগ্রেস সদস্য জন ডেলানি, মন্টানার গভর্নর স্টিভ বুলক, কলোরাডোর সাবেক গভর্নর জন হিকেনলুপার এবং লেখক মেরিয়েন উইলয়ামসন।

মঙ্গলবার রাতের বিতর্কে প্রতিদ্বন্দ্বীদের আলোচনায় প্রাধান্য পায় স্বাস্থ্যসেবা; গত বছরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে এ বিষয়ের উপর ভর করেই বাজিমাত করেছিল ডেমোক্রেট পার্টি। 

১০ প্রতিদ্বন্দ্বী স্যান্ডার্সের সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ‘সিঙ্গল-পেয়ার হেলথ সিস্টেম’ ও ওবামা আমলের ‘অ্যাফোর্ডেবল হেলথ কেয়ার’ সিস্টেম নিয়ে তাদের মতামত দেন।

মধ্যপন্থি প্রার্থীদের অনেকেই স্যান্ডার্সের নীতি ডেমোক্রেট পার্টির জন্য ‘আত্মঘাতী’ হবে বলে মন্তব্য করেন। রায়ান এবং ডেলানি বলেন, ‘সিঙ্গল-পেয়ার হেলথ সিস্টেমে’ নীতিতে চাকরিদাতার দায় কমে যাওয়ায় তা  শ্রমজীবী মার্কিনিদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

স্যান্ডার্স তার আলোচনায় বলেন, লাখ লাখ মার্কিনি এখনো বীমা সুবিধার বাইরে, কিন্তু এ খাতে জড়িত ব্যবসায়ীরা শত শত কোটি টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন।

ওয়ারেন ছিলেন খানিকটা রক্ষণাত্মক; বলেছেন, “কেউই কারও স্বাস্থ্যসেবা কেড়ে নিচ্ছে না।”

ডেমোক্রেটদের রিপাবলিকানদের মতো কথা বলা বন্ধেও অনুরোধ জানান তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত নিয়েও প্রতিদ্বন্দ্বীরা একে অপরের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়েছেন। বুটিগিগ ও ও’রোরকে অভিবাসন নিয়ে এখনকার নীতি বদলানোর কথা বললেও শরণার্থীদের সীমান্ত টপকে ভেতরে ঢোকাকে অবৈধ অ্যাখ্যা দিয়েছেন।

অন্যদিকে ওয়ারেন ও স্যান্ডার্স বলছেন, যে পরিবারগুলো সীমান্তে আসছে, তাদেরকে অপরাধী বানানো উচিত হবে না।

স্বাস্থ্যসেবা ও অভিবাসন নীতি নিয়ে আপত্তি থাকলেও মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রায় সবারই বন্দুক নিয়ন্ত্রণ, রাজনীতিতে কালো টাকা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে অবস্থান কাছাকাছি ছিল।

বুধবার রাতের ‍বিতর্কে যে ১০ প্রতিদ্বন্দ্বী লড়বেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগেরই চোখ থাকবে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ক্যালিফোর্নিয়ার সিনেটর কমলা হ্যারিসের ওপর।

ডেমোক্রেট মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে জো বাইডেনই অন্যদের তুলনায় অনেকখানি এগিয়ে আছেন বলে এমারসন ও কুইনিপ্যাক ইউনিভার্সিটির জরিপে দেখা গেছে।