ক্ষমতাসীন সেনা কাউন্সিল বুধবার থেকে এ নির্দেশ কার্যকর করতে বলেছে বলে জানিয়েছে সুদানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা।
হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাজধানী খার্তুমসহ দেশটির বেশ কয়েকটি শহরে শিক্ষার্থীরা ব্যাপক বিক্ষোভ দেখানোর পর স্কুল বন্ধের এ আদেশ আসে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
জ্বালানি ও রুটির ঘাটতি নিয়ে সোমবার নর্থ করদোফানের এল-ওবেইদে ওই বিক্ষোভ হয়েছিল।
গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া স্কুল শিক্ষার্থীদের স্লোগান দিতেও দেখা গেছে; এরপর ব্যাপক গুলির শব্দে তাদের আর্তচিৎকার ঢাকা পড়ে যায়।
সুদানের একটি হাসপাতালে তোলা কয়েকটি ছবিতে হতাহতদের রক্তাক্ত ছবি দেখা গেছে।
বিক্ষোভকারীরা এ গুলির ঘটনায় আধাসামরিক র্যা পিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে (আরএসএফ) দায়ী করছেন।
ঘটনার পরপরই কর্তৃপক্ষ এলাকাটিতে জরুরি অবস্থা ও সান্ধ্য আইন জারি করে।
সুদানের সেনা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।
“এল-ওবেইদে যা ঘটেছে, তা দুঃখজনক। শান্তিপূর্ণ বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা অগ্রহণযোগ্য অপরাধ, এর দ্রুত জবাবদিহিতা প্রয়োজন,” উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি এমনটাই বলেছেন বলে সুদানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে।
ইউনিসেফ এ ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি দায়ীদের দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছে।
“কোনো শিশুকেই তাদের স্কুল ইউনিফর্মে কবর দেওয়া উচিত নয়,” বিবৃতিতে বলেছে তারা।
নিহত শিক্ষার্থীদের বয়স ১৫ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে বলেও জানিয়েছে জাতিসংঘের এ শিশু বিষয়ক সংস্থা।
সোমবারের ওই গুলির ঘটনায় ৫ জন নিহতের পাশাপাশি অন্তত ৬২ জন আহত হয়েছেন বলে গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংগঠন সুদান ডক্টরস্ এর কেন্দ্রীয় কমিটি জানিয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ইউনিফর্ম পরে হাতে সুদানের পতাকা নিয়ে খার্তুমের বিভিন্ন সড়ক দখলে নিয়ে বিক্ষোভ দেখায়।
রাজধানীর পাশাপাশি সুদানের অন্যান্য শহরেও স্কুলশিক্ষার্থীরা এল-ওবেইদের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে।
মঙ্গলবার পরের দিকে কর্তৃপক্ষ সব স্কুল বন্ধে নির্দেশ জারি করে।
“সব রাজ্যের গভর্নররা আগামীকাল (বুধবার) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন,” জানায় রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সুনা।
কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভের পর জুলাইয়ের মাঝামাঝি সুদানের সম্মিলিত বিরোধী জোট ও ক্ষমতাসীন সেনা কাউন্সিলের মধ্যে পরবর্তী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ক্ষমতা ভাগাভাগির একটি চুক্তি হয়।
সে অনুযায়ী ৬ বেসামরিক ও ৫ জেনারেলকে নিয়ে একটি নতুন শাসন পরিষদ গঠন করার কথা; ওই শাসন পরিষদের পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন ও বিক্ষোভ-সহিংসতায় সেনাবাহিনীর জেনারেলদের দায়মুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে মঙ্গলবার দুই পক্ষের মধ্যে একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।
সোমবার এল-ওবেইদে ওই ঘটনার পর বিরোধী জোট ওই বৈঠক থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়।