হংকংয়ে নগরীজুড়ে ট্রেন চলাচলে বিক্ষোভকারীদের বাধা

হংকংয়ে শত শত বিক্ষোভকারী নগরী জুড়ে ট্রেন চলাচলে বাধা ‍সৃষ্টি করছে । কোথাও কোথাও বিক্ষোভকারীরা  স্টেশনেই ট্রেন আটকে দিচ্ছে। আবার কোথাও দরজা আটকে রাখছে বা কেউ কেউ এমার্জেন্সি অ্যালার্ম ঘিরে রেখেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2019, 02:45 PM
Updated : 30 July 2019, 02:45 PM

বিবিসি জানায়, মঙ্গলবার সকালে অফিসের সময়ে ট্রেন আটকে দেওয়ায় নগরবাসীকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। তাদের বিভিন্ন সাবওয়ের প্ল্যার্টফর্মে দীর্ঘক্ষণ আটকা পড়ে থাকতে হয়। ফলে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছতে তাদের অনেক দেরি হয়ে যায়।

গত টানা আট সপ্তাহ ধরে হংকংয়ে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ চলছে। চীনের কাছে অপরাধী প্রত্যর্পণ নিয়ে একটি প্রস্তাবিত বিল বাতিলের দাবিতে এই বিক্ষোভ শুরু হলেও এখন তা এশিয়ার বৃহৎ বাণিজ্য নগরীটির স্বাধীনতার আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।

একসময় ব্রিটিশ উপনিবেশ হংকংকে ১৯৯৭ সালে চীনের কাছে হস্তান্তর করে যুক্তরাজ্য। চীনের কাছে হস্তান্তরের সময় যুক্তরাজ্য শহরটির স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতা এবং স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা অটুট রাখার প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিয়েছিল।

হংকংয়ের জন্য চীন ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থাপনার’ নীতি নিয়েছে। কিন্তু যুক্তরাজ্যকে প্রতিশ্রুতি দিলেও হংকং নিজেদের ভূখণ্ডভুক্ত হওয়ার পর থেকেই বেইজিং গণতান্ত্রিক সংস্কারে বাধা, স্থানীয় নির্বাচনে হস্তক্ষেপ ও বিরোধীদের ওপর তুমুল দমন-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ সমালোচকদের।

তবে জন দুর্ভোগ হলেও হংকংয়ের বাসিন্দারা বিক্ষোভকারীদের পক্ষেই আছেন। সাবওয়ে স্টেশনে আটকে পড়া এক ব্যক্তি বিবিসি’কে বলেন, “আমার কাজ এবং আমার মিটিং অপেক্ষায় থাকতে পারবে। কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও মানবাধিকারকে এগিয়ে নিতে হবে, কারণ এগুলো অপেক্ষা করতে পারবে না। তাই এ আন্দোলনের সঙ্গে আমি সহমত।”

“আমি মনে করি এটি ঠিকই আছে; কারণ, সরকারের উচিত নাগরিকদের দাবির জবাব দেওয়া।”তবে কোথাও কোথাও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যাত্রীদের  হাতাহাতির খবরও পাওয়া গেছে বলে জানায় বিবিসি।

৬৪ বছরের এক বৃদ্ধ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “এটা খুবই অযাচিত এবং বিরক্তিকর। আমার কাজে যাওয়ার তাড়া আছে, এজন্য আমার যাওয়া দরকার।”

বিক্ষোভকারীরা জানান, সাধারণ মানুষকে তারা  দুর্ভোগে ফেলতে চান না। “কিন্তু কর্তৃপক্ষকে বোঝাতেই হবে কেন আমরা আন্দোলন করছি। আমাদের কোনো নেতা নেই। আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন, স্বপ্রণোদিত হয়ে আমরা এই গণআন্দোলন করছি।”

সকালে বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন সাবওয়ে স্টেশনের দখল নিলে হংকংয়ের রেল কোম্পানি এমটিআর এর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা বুঝতে পারছি কিছু মানুষ তাদের দাবির কথা জানাতে চায়। কিন্তু আমরা দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি,তাদের কর্মকাণ্ড রেল যোগাযোগে বাধা সৃষ্টি করছে এবং যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।”