ইয়েমেনের বাজারে হামলায় শিশুসহ অন্তত ১০ জন নিহত

ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলীয় সাদা প্রদেশে একটি বাজারে চালানো হামলায় শিশুসহ অন্তত ১০ বেসামরিক নিহত হয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2019, 06:29 AM
Updated : 30 July 2019, 06:29 AM

সোমবারের এ হামলার জন্য ইয়েমেনের যুদ্ধরত পক্ষগুলো একে অপরকে দায়ী করেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

স্থানীয় আল জোমহুরি হাসপাতালের ম্যানেজার জানিয়েছেন, কাতাবির জেলার ওই বাজারে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর হামলায় ১৩ জন নিহত ও ২৩ জন আহত হয়েছেন।

পরে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪ জনে দাঁড়িয়েছে বলে ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিদের পরিচালিত আল মাসিরাহ টেলিভিশন জানিয়েছে।

অপরদিকে সৌদি সমর্থিত ইয়েমেন সরকারের তথ্যমন্ত্রী মোয়াম্মার এল ইরাইয়ানি এক টুইটার পোস্টে জানিয়েছেন, ওই বাজারে কাতিউশা রকেট নিক্ষেপ করেছে হুতিরা আর তাতে ১০ বেসামরিক নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন।

রয়টার্সের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে সৌদি জোটের মুখপাত্র কর্নেল তুর্কি আল মালকি বলেছেন, “আল থাবেত বাজারে হামলাটি হুতিরা চালিয়েছে। ইয়েমেনি ও আল থাবেত নৃগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে চালানো সন্ত্রাসী হামলা এটি।”

আল থাবেত নৃগোষ্ঠী হুতিদের বিরোধী বলে দাবি করেছেন তিনি; তবে বিস্তারিত আর কিছু জানাননি।

রয়টার্সের ফটোগ্রাফারদের নেওয়া ছবিতে নয়টিরও বেশি মৃতদেহ দেখা গেছে। মর্গের পলিথিন শিটের ওপর লাইন করে রাখা এসব মৃতদেহের কয়েকটি ছিন্নবিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিল।

আল জোমহুরি হাসপাতালের ম্যানেজার বলেছেন, “নিহতদের মধ্যে দুটি শিশু ও আহতদের মধ্যে ১১টি শিশু আছে।”

পরে মাসিরাহ টেলিভিশন চারটি শিশু নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে।

২০১৪ সালে ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারকে উচ্ছেদ করে রাজধানী সানাসহ ইয়েমেনের অধিকাংশ এলাকায় নিয়ন্ত্রণ নেয় ইরানপন্থি শিয়া হুতিরা। তারপর ওই সরকারকে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলে ২০১৫ সালে ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে হস্তক্ষেপ করে পশ্চিমা সমর্থিত সৌদি নেতৃত্বাধীন সুন্নি সামরিক জোট বাহিনী।

গত চার বছর ধরে চলা এ যুদ্ধে প্রায় লাখ খানেক লোক নিহত হয়েছে ও আরব উপদ্বীপের দেশ ইয়েমনকে দুর্ভিক্ষের প্রান্তে ঠেলে দিয়েছে। বহু দিন ধরে চলা সামরিক অচলাবস্থার মধ্যে দেশটির পরিস্থিতি দিন দিন অত্যন্ত নাজুক হয়ে উঠছে।

এর আগে ২০১৮ সালের অগাস্টে সাদার একটি বাজারের মধ্য দিয়ে গমনরত একটি বেসামরিক বাসে সৌদি জোটের বিমান হামলায় শিশুসহ বহু লোক নিহত হয়েছিল। তারা একটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপকে হামলা চালিয়েছে বলে প্রথমে দাবি করেছিল সৌদি জোট, কিন্তু পরে বাসটিতে অহেতুক হামলা চালানো হয়েছে বলে স্বীকার করে।

ইয়েমেনের হাসপাতালে, স্কুলে, বাজারে সৌদি জোটের বিমান হামলায় এ পর্যন্ত বহু বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। এ জোটকে অস্ত্র ও গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সহায়তা করায় যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর তীব্র সমালোচনা করছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো।

এদিকে তারা ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা করে না বলে দাবি করেছে সৌদি জোট।