রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ‘প্রস্তুতি সামান্যই’

মিয়ানমার বারবার বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে তারা প্রস্তুত বলে আসলেও এ ব্যাপারে তাদের প্রস্তুতি একেবারেই ‘যৎসামান্য’। স্যাটেলাইটের ছবিতে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর পুননির্মাণের চিহ্ন দেখা যায়নি বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার একটি গবেষণা ও পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান।

>>রয়টার্স
Published : 25 July 2019, 02:37 PM
Updated : 25 July 2019, 02:37 PM

২০১৭ সালের অগাস্টে রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমনাভিযানের মুখে হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম। সহিংসতা চলাকালে প্রায় ৪শ’ রোহিঙ্গার বাড়িঘর জ্বালিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়া হয়।

অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটের (এএসপিআই) মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ এ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দিলেও স্যাটেলাইট ছবি পর্যালোচনায় রোহিঙ্গাদের পুরনো আবাসস্থলে কোনও নির্মাণ কাজের লক্ষণ দেখা যায়নি। বরং কয়েকটি এলাকায় এখনো আবাসিক বাড়িঘর ভাঙা হচ্ছে।

এএসপিআই এর গবেষক নাথান রুসার এক বিবৃতিতে বলেছেন, “২০১৮ ও ২০১৯ সালে আবাসিক এলাকায় বাড়িঘর ভাঙা চলতে থাকার যে দৃশ্য স্যাটেলাইট ছবিতে স্পষ্টতই ধরা পড়েছে তাতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যর্পণে মিয়ানমার সরকারের আগ্রহের বিষয়টি গুরুতর প্রশ্নের মুখে পড়েছে।”

এ ব্যাপারে মন্তব্যের জন্য মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্রকে ফোন করা হলে তিনি কোনো জবাব দেননি। রাখাইনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট এর উপ- পরিচালক কিয়াও সোয়ার তুন কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

মিয়ানমার বরাবরই দাবি করে আসছে, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে তারা প্রস্তুত থাকলেও বাংলাদেশের কারণে তা শুরু হচ্ছে না।

অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ ইস্ট এশিয়ান নেশন্স (আসিয়ান)-এর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের উদ্যোগের প্রশংসা করা হয়েছে।

গত জুন মাসে গণমাধ্যমে ফাঁস হওয়া এএইচএ সেন্টারের প্রতিবেদনে আশা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, আগামী দুই বছরের মধ্যে ৫ লাখ রোহিঙ্গা সেখানে ফিরতে পারে।

তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ প্রতিবেদনে রাখাইনের চলমান সংঘাত এবং নৃশংসতার বিষয়টিকে আমলে না নেওয়ার অভিযোগ করেছে। ওদিকে, জাতিসংঘ বলছে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনো রাখাইনে তৈরি হয়নি।