বিবিসি জানিয়েছে, কংগ্রেসের সামনে দেওয়া সাক্ষ্যে স্পেশাল কাউন্সেলর মুলার বলেছেন, তিনি বিচারে বাধা সৃষ্টির দায় থেকে প্রেসিডেন্টকে মুক্ত করেননি।
যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রচারশিবিরের সঙ্গে রাশিয়ার আঁতাতের অভিযোগ নিয়ে দুই বছর ধরে তদন্ত করছেন মুলার।
রুশ আঁতাতের অভিযোগের পাশাপাশি এ নিয়ে তদন্তে বাধা দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিচারে বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করেছিলেন কি না, মুলারকে তাও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছিল।
দুই বছরের তদন্তের পর চলতি বছরের মার্র্চে তদন্তের সংক্ষিপ্ত প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে বিচারকাজ বিঘ্নিত করার অভিযোগ থেকে তাকে ‘পুরোপুরি দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে’ বলে দাবি করেছিলেন ট্রাম্প।
কিন্তু বুধবার কংগ্রেসের শুনানিতে ট্রাম্পের ওই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন মুলার। এ দিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের বিচার ও গোয়েন্দা বিষয়ক দুটি কমিটির শুনানিতে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি।
ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের সঙ্গে রাশিয়ার আঁতাতের কোনো প্রমাণ না পেলেও রাশিয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সাবেক এ এফবিআই পরিচালক জোর গলায় বলেছেন, রাশিয়া ট্রাম্পকে জেতাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছিল।
তদন্ত চলাকালেই মুলারের দল ২০১৬-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ হস্তক্ষেপের অভিযোগে ৩৫ ব্যক্তি ও তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিল। ট্রাম্প কিংবা তার পরিবারের কোনো সদস্য অবশ্য এ অভিযোগের জালে আটকাননি।
কংগ্রেসের শুনানিতে মুলার জানান, তদন্তে তিনি ও তার দল প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না আনতে পারলেও, তাকে দায়মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না, এমন সিদ্ধান্তেই উপনীত হয়েছিলেন।
বিচার বিভাগীয় কমিটির সদস্যরা তার ৪৪৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে ট্রাম্পকে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে কিনা তা নিয়ে বেশি আগ্রহ দেখালেও মুলারের লক্ষ্য ছিল মার্কিন গণতন্ত্রের ওপর রাশিয়ার হুমকির বিষয়টিকে জোরালোভাবে উপস্থাপন করা।
“চাকরি জীবনজুড়ে আমি আমাদের গণতন্ত্রের ওপর আসা অসংখ্য চ্যালেঞ্জ দেখেছি; নির্বাচনে রুশ সরকারের হস্তক্ষেপের চেষ্টা সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের। এ ধরনের হস্তক্ষেপ ঠেকাতে আমাদের আরও অনেক কিছু করা প্রয়োজন, কেবল রাশিয়ার দিক থেকেই নয়, অন্যদের দিক থেকেও,” বলেছেন তিনি।
হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের বিচার বিভাগীয় কমিটির রিপাবলিকান সদস্যরা প্রেসিডেন্টকে ‘অভিযুক্ত কিংবা দায়মুক্তি দেওয়া’ কোনোটাই না করায় মুলারের কঠোর সমালোচনা করেন।