জনসন না হান্ট- অপেক্ষায় ব্রিটেন

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছেদের জটিল অংক মেলানোর ভার আর যুক্তরাজ্যের নেতৃত্ব টেরিজা মে কার হাতে দিয়ে যাবেন, তার ফয়সালা হবে মঙ্গলবার।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 July 2019, 05:18 AM
Updated : 23 July 2019, 05:19 AM

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন এবং বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্টের মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নিতে সোমবার বিকাল পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির ১ লাখ ৬০ হাজার নিবন্ধিত সমর্থক।

বিবিসি জানিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরের আগে আগে লন্ডনে সেই ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। আর তাতে যিনি কনজারভেটিভ পার্টির নেতা নির্বাচিত হবেন, তিনিই বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটিশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন।      

কনজারভেটিভ পার্টির নেতাকর্মীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার দৌড়ে স্পষ্টতই এগিয়ে আছেন লন্ডনের সাবেক মেয়র জনসন।

অবশ্য অর্থমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ডসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন, বরিস জনসনের অধীনে তারা কাজ করবেন না।

ব্রেক্সিট ব্যর্থতায় দলে বিদ্রোহের মুখে সরে যেতে বাধ্য হওয়া টেরিজা মে মঙ্গলবার সকালে তার মন্ত্রিসভার সঙ্গে শেষ বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন।

এরপর বুধবার বিকালে রানির সঙ্গে দেখা করে আনুষ্ঠানিকভাবে তার পদত্যাগপত্র দেবেন। এর পরপরই তার উত্তরসূরি বাকিংহাম প্যালেস ঘুরে এসে অসীন হবেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর পদে।   

ভোটের আগে শুক্রবার ও শনিবার কনজার্ভেটিভ পার্টির এক অনলাইন জরিপে দেখা যায়, ৭৩ শতাংশ নেতাকর্মী বরিস জনসনকে সমর্থন দেওয়ার কথা বলেছেন। আর জেরেমি হান্টের পক্ষে বলেছেন ১৫ শতাংশ।

প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলে আগামী ৩১শে অক্টোবরের মধ্যে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের দায়িত্ব বর্তাবে বরিস জনসনের ওপর আর তিনি ‘যে কোন মূল্যে’ তা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন।

ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে মের পরিকল্পনার সঙ্গে একমত হতে না পারায় এক বছর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন নানা কারণে আলোচিত জনসন।

২০১৬ সালের ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে এক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেশটির চার দশকের সম্পর্কোচ্ছেদের রায় হয়। ভোটে হারের পর রক্ষণশীল দলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করলে টেরিজা মে সেই দায়িত্ব নিয়ে বিচ্ছিন্নতার পথরেখা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেন।

রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক এই জোট থেকে কোন প্রক্রিয়ায় যুক্তরাজ্য আলাদা হবে এবং এরপর ইইউভুক্ত বাকি ২৭টি রাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক কেমন হবে, সেই পথ বের করার জন্য ২১ মাস সময় পেয়েছিলেন মে। কিন্তু সেজন্য যে পরিকল্পনা তিনি সাজিয়েছিলেন তা পার্লামেন্টে পাস করাতে না পারায় ব্রেক্সিটের সময়সীমা বাড়িয়ে নতুন তারিখ ঠিক হয় ৩১শে অক্টোবর।

কিন্তু নিজের দলে বিদ্রোহের মুখে গত ৭ জুন নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিতে বাধ্য হন টেরিজা মে, যদিও তার সরকারের মেয়াদ রয়েছে ২০২২ সাল পর্যন্ত।

ওই মেয়াদের বাকি সময়ের জন্য যিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পাবেন, তাকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা করে বিচ্ছেদের হিসাব চূড়ান্ত করতে হবে। আর তাতে তিনি ব্যর্থ হলে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার নতুন চক্করে পড়তে হবে যুক্তরাজ্যকে।