ইথিওপিয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ১৭

নতুন একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের জন্য আন্দোলনরত ইথিওপিয়ার সিদামা নৃগোষ্ঠীর লোকজনের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছে। 

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 July 2019, 05:52 PM
Updated : 20 July 2019, 05:52 PM

স্থানীয় এক কর্মকর্তা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বরাতে শনিবার জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। 

স্থানীয় এক জেলা কর্মকর্তা শনিবার রয়টার্সকে জানিয়েছেন, রাজধানী আদ্দিস আবাবা থেকে ২৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে হাওয়াসা নগরীর নিকটবর্তী একটি ছোট শহরে অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন।

এর আগে শুক্রবার ওই অঞ্চলের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষগুলো গুলিবিদ্ধ হয়ে চার প্রতিবাদকারী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছিল। 

২০১৮ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী আবি আহমদের বিভিন্ন রাজনৈতিক সংস্কারে উৎসাহিত সিদামা আন্দোলনকারীরা বৃহস্পতিবার একতরফাভাবে একটি নতুন আঞ্চলিক রাজ্যের ঘোষণা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে পাঁচ মাসের মধ্যে একটি গণভোট গ্রহণ করা হবে, কেন্দ্রীয় সরকারের এমন প্রস্তাব গ্রহণ করে ঘোষণায় দেরি করতে সিদামাদের নিয়ে গঠিত একটি বিরোধীদল রাজি হলেও নৃগোষ্ঠীটির অনেকে দেরি করতে রাজি হয়নি।

এ নিয়ে হাওয়াসা থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরের শহর ওয়োটেরা রাসায় সংঘাত দেখা দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে সেনা পাঠানো হয়।

মালগা জেলার ওই শহরটির প্রধান শুবালে বুটা টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেন, “সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করতে বৃহস্পতিবার সৈন্যরা শহরে টহল দিচ্ছিলো। এক পর্যায়ে তারা রাস্তার পাশে লোকজনকে জড়ো হতে দেখে মনে করে, তারা সেখানে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এভাবেই হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত।”

এখানে ১৩ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।

শুক্রবার রাতে মালগার এক বাসিন্দা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, গুলিবর্ষণের পর তিনি ১৪টি লাশ দেখেছেন।

তিনি বলেন, “যে মাঠে লোকজন জড়ো হয়েছিল আমার বাড়ি তার কাছেই। সেখানে যারা ছিল তারা আমাকে জানিয়েছে, শহরে সামরিক বাহিনীর এসেছে (বৃহস্পতিবার) এবং যেখানেই লোকজনকে জড়ো হয়ে গণভোট নিয়ে কথা বলতে দেখছে সেখানেই তাদের ওপর গুলি ছুড়ছে।”

তিনি জানান, গুলিবর্ষণ যেখানে হয়েছে পরে সেখানে গিয়ে তিনি লাশ গুনেছেন।

শনিবার শহরটির পরিস্থিতি ‘অপেক্ষাকৃত’ শান্ত ছিল বলে জানিয়েছেন শহর প্রধান শুবালে।  

ইথিওপিয়ায় নৃগোষ্ঠীরভিত্তিক নয়টি আঞ্চলিক রাজ্য রয়েছে। ফেডারেল সরকারের তত্ত্বাবধানে থাকলেও রাজ্যগুলো রাজস্ব ও নিরাপত্তা বাহিনীর বিষয়ে স্বায়ত্তশাসন ভোগ করে থাকে।

আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল রাষ্ট্রটির ফেডারেল পদ্ধতি দেশটির বৃহত্তম নৃগোষ্ঠীগুলোকে স্বায়ত্তশাসন ভোগ করার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু সিদামার মতো অপেক্ষাকৃত ছোট নৃগোষ্ঠীগুলো অভিযোগ তারা উপেক্ষিত হচ্ছে এবং তাদের মধ্যে অনেকে তাদের নিজেদের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের দাবি তুলেছে।

নিজেরাই নিজেদের নতুন স্বায়ত্তশাসিত এলাকা ঘোষণা করার যে আওয়াজ তারা তুলেছে তা আদ্দিস আবাবার ফেডারেল সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।