এশিয়া-প্যাসিফিকে ‘মেথামফেটামাইন মাদকের বাণিজ্য বেড়েছে কয়েকগুণ’

বিভিন্ন দেশে ক্রিয়াশীল সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রগুলো দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় বানানো মেথামফেটামাইন মাদকের বিপুল অংশ চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিষয়ক দপ্তর (ইউএনওডিসি)।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2019, 10:32 AM
Updated : 18 July 2019, 10:32 AM

বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে তারা কেবল এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলেই মেথামফেটামাইনের বাজার ৩ হাজার কোটি ৩০ লাখ ডলার থেকে ৬ হাজার ১শ কোটি ৪০ লাখ ডলারের মধ্যে বলে ধারণা দিয়েছে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

২০১৩ সালেও এ অঞ্চলে ক্রিস্টাল মেথ মাদকের বাণিজ্য এক হাজার ৫০০ কোটি ডলারের বেশি ছিল না বলে অনুমান করা হয়; দৃর্নীতির মহামারি, আইনের দুর্বল প্রয়োগ এবং সীমান্তে ঢিলেঢালা প্রহরাকে কাজে লাগিয়ে মাদকের শক্তিশালী সিন্ডিকেট এ বাণিজ্যকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে নিয়েছে, বলছে জাতিসংঘের এ সংস্থা। 

“দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অনেক এলাকায় সীমান্তে ঘুষের ব্যবস্থাপনা অনেকটা আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নেওয়া ফি-র মতো নিয়ন্ত্রণ করা হয়,” প্রতিবেদনে এমনটাই বলেছে ইউএনওডিসি।

হংকং, ম্যাকাউ, তাইওয়ান ও থাইল্যান্ডভিত্তিক মেথামফেটামাইনের এ কার্টেলগুলো তাদের চালানের বেশিরভাগ অংশ মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় বিভিন্ন বৃহৎ পরীক্ষাগারে বানায়, এরপর জাপান, নিউ জিল্যান্ড পর্যন্ত দূরত্বেও সরবরাহ করে।

“এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মেথামফেটামাইন বাজার এখন বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড়। সকল সংগঠিত অপরাধের মধ্যেই মেথ চোরাচালান হচ্ছে সবচেয়ে বিপদজনক, একইসঙ্গে সবচেয়ে লাভজনকও,” রয়টার্সকে বলেছেন সংস্থাটির দক্ষিণপূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিনিধি জেরেমি ডগলাস।

এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নিউ জিল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ার বাজারই প্রায় দুই হাজার কোটি ডলারের, যা এ অঞ্চলের অনুমিত বাণিজ্যের এক তৃতীয়াংশ, বলছে জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিষয়ক দপ্তর।

রয়টার্স বলছে, গত বছর কেবল পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণপূর্ব এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডের বাসিন্দারাই প্রায় ৩২০ টনের মতো মেথ নিয়েছিল; আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে জব্দ হয়েছিল রেকর্ড ১২০ টন।

উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সাধারণত মধ্যবিত্ত, পার্টিতে যাওয়া লোকজনই এ ক্রিস্টাল মেথ নেন; অন্যদিকে তুলনামূলক দরিদ্র দেশে কারখানা কিংবা নির্মাণ কাজে জড়িত শ্রমিকরা পরিশ্রমের সঙ্গে মানিয়ে নিতে ক্যাফেইনের সঙ্গে ট্যাবলেটের মতো মিশিয়ে এটি নিয়ে থাকে।

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার ক্যাসিনোগুলোতে নজরদারি কম থাকায় মেথামফেটামাইনকে মুদ্রাপাচারের কাজেও ব্যবহার করা যায়; পরে সেই অর্থ চলে যায় সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ের বৈধ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে, বলেছেন জেরেমি।