গত ফেব্রুয়ারিতে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল কোর্টে মাদক ও অর্থ পাচারসহ মোট ১০ টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন ৬২ বছর বয়সী গুজমান।
২০১৫ সালে মেক্সিকোর সুরক্ষিত কারাগার থেকে টানেল খুঁড়ে পালিয়েছিলেন গুজমান। পরে তিনি আবার ধরা পড়েন। ২০১৭ সালে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ মাদক সম্রাটের মাদক পাচার ও অপরাধ চক্র ‘সিনালোয়া কার্টেল’ মেক্সিকো ছাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও আমেরিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশে কোকেন, হেরোইন, মারিজুয়ানা ও মেথাম্ফেটামাইন পাচারের জন্য কুখ্যাত।
বিবিসি জানায়, গুজমান তার কার্টেলের শত্রুদের নির্যাতন এবং হত্যা করতেন বলে বিচার চলাকালে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
বুধবার ব্রুকলিনের আদালতকক্ষে সাজার রায় ঘোষণার আগে এক দোভাষীর মাধ্যমে গুজমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে তাকে আটকে রাখা দিনে ২৪ ঘন্টাই মানসিক নিপীড়ন এবং মানবেতর অবস্থায় রাখার সামিল। তিনি ন্যায়বিচার পাননি এবং তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়েছে বলেও গুজমান অভিযোগ করেছেন।
গুজমান যে সব অপরাধ করেছেন তার বিচারে ন্যূনতম সাজা হিসাবেই তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাড়তি ৩০ বছরের সাজা তিনি পেয়েছেন আগ্নেয়াস্ত্রের বেআইনি ব্যবহারের কারণে। তাকে প্রায় তেরশ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানও গুনতে হবে।
গুজমানকে কলোরাডোর ফ্লোরেন্সে দেশটির সবচেয়ে সুরক্ষিত ফেডারেল কারাগারে রাখা হবে। এ বিষয়ে সরকার পক্ষের আইনজীরা বলেন, গুজমান ‘টন টন স্টিলের পেছনে’ কারাভোগ করবেন।
আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে গুজমান আবেদন করবেন কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
এর আগে ২০০১ ও ২০১৫ সালে মেক্সিকোর কারাগার থেকে কৌশলে পালিয়েছিলেন ‘এল চ্যাপো’ বা ‘পিচ্চি’ নামে পরিচিত গুজমান।
গত কয়েক দশকে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে সুগঠিত ও অন্যতম ক্ষমতাশালী অপরাধী চক্রের ‘বস’ হয়ে উঠেছিলেন, এমনকি ফোর্বস সাময়িকীতে বিশ্বের র্শীর্ষস্থানীয় কোটিপতিদের তালিকায় তার নামও উঠেছিল।
সর্বশেষ ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে গুজমানকে মেক্সিকোর উত্তরাঞ্চলীয় শহর লস মোচিস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরের বছরে মেক্সিকো সরকার তাকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করে।