‘ট্রাম্পের ইরান পারমাণবিক চুক্তি বর্জনের কারণ ওবামা’

বারাক ওমাবার প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ইরান পারমাণবিক চুক্তি বর্জন করেছিলেন বলে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের সাবেক রাষ্ট্রদূতের ফাঁস হওয়া একটি মেমোতে জানা গেছে। 

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 July 2019, 06:52 AM
Updated : 14 July 2019, 06:52 AM

ট্রাম্পের ওই পদক্ষেপকে ‘নৈরাজ্যজনক কূটনৈতিক আচরণ’ বলে বর্ণনা করেছিলেন সাবেক ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত স্যার কিম ডেরক, রোববার এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদপত্র মেইল এমনটি জানিয়েছে বলে খবর বিবিসির।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক চুক্তিতে অবিচল থাকার অনুরোধ জানানোর পর ওই মেমোটি লেখা হয়েছিল বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। 

ওই চুক্তির অধীনে ইরান তাদের স্পর্শকাতর পারমাণবিক তৎপরতা সীমিত করতে রাজি হয়েছিল। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিনিময়ে আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোও পরিদর্শনের অনুমতি দিতেও রাজি হয়েছিল ইরান। 

কিন্তু এসব সত্বেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওই চুক্তিটিকে যথেষ্ট বলে মনে করেননি।

মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সফর থেকে জনসন যুক্তরাজ্যে ফেরার পর কিম লেখেন, তার পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ওই চুক্তিটি করেছিলেন বলে ‘ব্যক্তিগত কারণে’ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পারমাণবিক চুক্তিটি বর্জন করতে যাচ্ছেন বলে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তার উপদেষ্টাদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছিল এবং চুক্তিটি থেকে সরে আসার পর হোয়াইট হাউসের ‘দৈনন্দিন’ করণীয় বিষয়ে কোনো কৌশল নির্ধারিত ছিল না বলে জানিয়েছিলেন তিনি।  

মেইল জানিয়েছে, জনসনের কাছে লেখা মেমোতে কিম বলেছেন, “(ট্রাম্প) প্রশাসন নৈরাজ্যজনক কূটনৈতিক পদক্ষেপের ওপর দাঁড়িয়ে ছিল, ওটা ওবামার চুক্তি ছিল- এমন আদর্শগত ও ব্যক্তিগত কারণে এটি হয়েছে বলে মনে হয়েছে।

“এর ওপর তারা ‘দৈনন্দিন’ কোনো কৌশলও স্পষ্ট করতে পারেনি; ইউরোপ বা ওই অঞ্চলের (মধ্যপ্রাচ্য) অংশীদার ও মিত্রদের সঙ্গে মানিয়ে চলার মতো কোনো পরিকল্পনাও করেনি বলে আজ সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (মার্কিন) সঙ্গে যোগাযোগ থেকে ধারণা পাওয়া গেছে।”

যুক্তরাজ্যের স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড ফাঁস হওয়া কূটনৈতিক মেমো প্রকাশ করার বিষয়ে গণমাধ্যমকে সতর্ক করা সত্বেও এ মেমোটি প্রকাশ করলো মেইল। ওই সতর্কবার্তায় বলা হয়েছিল, সাবেক রাষ্ট্রদূতের যোগাযোগের বিষয়ে সাংবাদিকরা বিস্তারিত আর কিছু প্রকাশ করলে দাপ্তরিক গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হতে পারে।

এক সপ্তাহ আগে ফাঁস হওয়া প্রথম মেমোতে ওই সময়ের ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত কিম ট্রাম্প প্রশাসনকে ‘তালগোল পাকানো ও অকর্মা’ বলে উল্লেখ করেছিলেন।

এর প্রতিক্রিয়ায় ক্ষিপ্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট কিমকে ‘অত্যন্ত নির্বোধ ব্যক্তি’ বলে বর্ণনা করে তার সঙ্গে আর কোনো কখনো কাজ করবেন না বলে জানান।

এ নিয়ে যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে বুধবার পদত্যাগ করেন কিম।

তার পদত্যাগের পর ফাঁস হওয়া বার্তার বিষয়ে একটি ফৌজদারি তদন্ত শুরু করেছে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড।