মুরসির মৃত্যু নিয়ে জাতিসংঘ ‘রাজনীতি’ করছে, অভিযোগ মিশরের

মিশর আদালতকক্ষে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির মৃত্যু নিয়ে ‘রাজনীতি’ করার অভিযোগ তুলেছে জাতিসংঘের বিরুদ্ধে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 June 2019, 05:27 PM
Updated : 19 June 2019, 05:27 PM

দেশটিতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন মোহাম্মদ মুরসি। গত সোমবার এক মামলার শুনানি চলাকালে আদালত কক্ষেই অচেতন হয়ে পড়েন ৬৭ বছরে মুরসি।

পরে কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। জাতিসংঘ মঙ্গলবারই মুরসির এ মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করতে ঘটনাটি তদন্তের আহ্বান জানায়।

আর এরই নিন্দা জানিয়ে মিশর বলছে, “মুরসির মৃত্যু হয়েছে স্বাভাবিক কারণেই।” জাতিসংঘ মিশরের বিচার প্রতিষ্ঠান নিয়ে সংশয় তৈরির চেষ্টা করছে বলে তারা অভিযোগ করেছে।

নির্বাচনের মাধ্যমে ২০১২ সালে মিশরে প্রথম গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসেছিলেন মুরসি। কিন্তু পরের বছরই ব্যাপক গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে সেনাবাহিনী তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে। তারপর থেকেই তিনি কারাগারে ছিলেন।

মুরসিকে উৎখাতের পর মিশর কর্তৃপক্ষ তার সমর্থক এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের ওপর দমনপীড়ন শুরু করে। মুরসির বিরুদ্ধে আনা হয় ষড়যন্ত্র, দেশদ্রোহিতা, গুপ্তচরবৃত্তি, জেল থেকে পালানোর চেষ্টাসহ একাধিক অভিযোগ। নিষিদ্ধ করা হয় মুসলিম ব্রাদারহুড দলকে।

তার পরিবার ও সমর্থকরা আগে থেকেই মুরসির স্বাস্থ্য এবং তাকে দীর্ঘ দিন ধরে নির্জন প্রকোষ্ঠে আটকে রাখা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছিল। কিন্তু সাবেক সেনাপ্রধান আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসি সরকার তা কানে তোলেনি।

মুরসির নির্জন কারাবাস এবং পরিবার ও আইনজীবীদের সঙ্গে তাকে দেখা করতে না দেওয়ার সমালোচনা করে আসা কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনও মুরসির মৃত্যুর ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে মিশর একজন বন্দির মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ তুলেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, “প্রায় ছয় বছরের বন্দিদশায় মুরসির পরিবার এবং তার আইনজীবীরা কারাকক্ষের পরিবেশ, সেখানে তার চিকিৎসার সুযোগ এমনকি পরিবার ও আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করতে না দেওয়া নিয়ে ক্রমাগত উদ্বেগ প্রকাশ করে গেছে। “তাকে দীর্ঘদিন নির্জন কারাবাসও করতে হয়েছে।”

আদালতে মুরসির মৃত্যু নিয়ে জাতিসংঘের সন্দেহের সমালোচনা  করেছেন মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আহমেদ হাফিজ। এক বিবৃতিতে অভিযোগ করে তিনি বলেন, জাতিসংঘ মিশরের প্রতিষ্ঠান নিয়ে অবিশ্বাস তৈরি এবং মিশরের বিচার ব্যবস্থার ন্যায়পরায়নতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেছে’।

“কোনো প্রমাণ ছাড়া আপরাধ কাণ্ডের সন্দেহ করা হচ্ছে।”