আদালতেই মারা গেলেন মিশরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মুরসি

মিশরে ২০১৩ সালে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি মারা গেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 June 2019, 05:45 PM
Updated : 17 June 2019, 06:17 PM

আদালতকক্ষে শুনানি চলার সময় হঠাৎ অচেতন হয়ে যাওয়ার পর তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। রাষ্ট্রীয় টিভি এ খবর জানিয়েছে।

মিশরে বর্তমানে নিষিদ্ধ ঘোষিত ইসলামিক আন্দোলনের দল মুসলিম ব্রাদারহুডের সাবেক শীর্ষ এ নেতা গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আদালতের শুনানিতে হাজির হয়েছিলেন।

মিশরের প্রথম গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পরের বছরই ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনী। তখন থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করে বন্দি রাখা হয়।

মুরসিকে উৎখাতের পর মিশর কর্তৃপক্ষ তার সমর্থক এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের ওপর দমনপীড়ন শুরু করে। মুরসির বিরুদ্ধে আনা হয় ষড়যন্ত্র, দেশদ্রোহিতা, গুপ্তচরবৃত্তি, জেল থেকে পালানোর চেষ্টাসহ একাধিক অভিযোগ।

ফিলিস্তিনি ইসলামপন্থি দল হামাসের সঙ্গে যোগসূত্র থাকার সন্দেহে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে কায়রোর আদালতে মুরসির শুনানি চলছিল বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় টিভি।

কে এই মুরসি?

মোহাম্মাদ মুরসি উত্তর মিশরের শারক্বিয়া প্রদেশের আল আদোয়াহ গ্রামে ১৯৫১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতক ও সন্মান ডিগ্রী লাভ করেছিলেন। পরে তিনি উচ্চ শিক্ষার্থে যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন।

মুরসি ২০০০ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ সময় তিনি মুসলিম ব্রাদারহুডের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যাক্তিত্বে পরিণত হন। ২০১২সালে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন।

তবে তার সমালোচক ও বিরোধীদের ভাষ্য, মুরসি দেশের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সঙ্কট মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়েছিলেন। তাছাড়া, তিনি দেশের বৃহত্তর স্বার্থের চেয়েও মুসলিম ব্রাদারহুডের ইসলামপন্থি কর্মসূচিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন।

মুরসি সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের বিরোধিতা বাড়তে শুরু করে এবং ২০১৩ সালের ৩০ জুনে মিশরজুড়ে রাস্তায় রাস্তায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

এরপর ৩ জুলাইয়ে সেনাবাহিনী সংবিধান স্থগিত করে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই টেকনোক্র্যাটিক অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ঘোষণা দেয় এবং মুরসিকে বন্দি করে।