লন্ডনে সহিংসতা: ফের মেয়র সাদিকের দিকে তোপ ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প লন্ডনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫টি হামলার ঘটনার পর শহরটির মেয়র সাদিক খানের ব্যর্থতার কড়া সমালোচনা করেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 June 2019, 09:32 AM
Updated : 16 June 2019, 09:32 AM

শুক্র ও শনিবারের ওইসব হামলায় তিনজন নিহত ও আরও তিনজন আহত হয়েছেন।

লন্ডনের এমন পরিস্থিতির জন্য সাদিক খানকে দায়ী করে ট্রাম্প শহরটির একজন নতুন মেয়র দরকার বলেও মন্তব্য করেছেন, জানিয়েছে বিবিসি।

সাদিক যুক্তরাজ্যের রাজধানীকে ‘ধ্বংস করছেন’ অভিযোগ করে শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট টুইটারে লন্ডনের মেয়রকে দেশটির ‘জাতীয় লজ্জা’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছেন।

ব্রিটিশ বিরোধীদলীয় নেতা জেরমি করবিন মার্কিন প্রেসিডেন্টের এসব মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।

“ট্রাম্প মেয়রকে আক্রমণ করতে গিয়ে বেদনাদায়ক ঘটনাগুলোকে হাতিয়ার করেছেন, এটা খুবই বিচ্ছিরি ব্যাপার,” বলেছেন তিনি।

লন্ডনের মেয়র সাদিক খানের সঙ্গে ট্রাম্পের কথার লড়াই নতুন নয়।

২০১৭ সালে লন্ডন ব্রিজে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায়ও শহরটির মেয়রের সমালোচনা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সাদিক খানকে ‘আইকিউ টেস্টে’ তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতারও আহ্বান জানিয়েছিলেন ট্রাম্প।

চলতি মাসের প্রথমদিকে তিনদিনের যুক্তরাজ্য সফরের শুরুতে স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দরে নামার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লন্ডনের মেয়রকে ‘স্টোন কোল্ড লুজার’ অ্যাখ্যা দিয়ে ‘তার উচিত লন্ডনের অপরাধের দিকে মনোযোগী হওয়া’ বলে মন্তব্য করেছিলেন।

যুক্তরাজ্য সফরে ট্রাম্পকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া উচিত নয়, সাদিক খানের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প সে সময় এসব কথা বলেছিলেন।

শনিবার রাতে যুক্তরাজ্যের ডানপন্থি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক কেটি হপকিন্স চব্বিশ ঘণ্টার ব্যবধানে লন্ডনে ৫টি হামলার ঘটনায় সাদিক খানের সমালোচনা করে টুইটারে পোস্ট দেন।

ট্রাম্প ওই পোস্টটি শেয়ার করে সাদিককে ‘একটি দুর্যোগ’ অ্যাখ্যা দিয়ে যুক্তরাজ্যের রাজধানীর একজন নতুন মেয়র দরকার বলে মন্তব্য করেন।

পরে অন্য এক টুইটে ট্রাম্প লেখেন, “সে (যুক্তরাজ্যের) জাতীয় লজ্জা, যে কিনা লন্ডন শহরকে ধ্বংস করছে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের পর সাদিক খানের এক মুখপাত্র জানান, মেয়র এ ধরনের টুইটের প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে সময় নষ্ট করতে রাজি নন।

লেবার নেতা জেরমি করবিনও পরে সাদিককে সমর্থন করে টুইট করেছেন।

“তিনি (মেয়র) সঠিকভাবেই পুলিশের কাজে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন, অন্যদিকে কেটি হপকিন্স ঘৃণা ও বিদ্বেষের সুর ছড়াচ্ছেন,” বলেছেন তিনি।

২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫টি পৃথক হামলার ঘটনায় পুলিশ এরই মধ্যে ১৪জনকে আটক করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ লন্ডনের ওয়ান্ডসওর্থে ১৮ বছর বয়সী এক তরুণ ছুরিকাঘাতে নিহত হন; কয়েক মিনিট পর দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনের প্লামস্টিডে ১৯ বছর বয়সী অপর এক তরুণকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

শনিবার সন্ধ্যায় টাওয়ার হ্যামলেটে ছুরিকাঘাতে মৃত্যু হয় প্রায় ৩০ বছর বয়সী এক ব্যক্তির।

এর কয়েক ঘণ্টা আগে ক্লাফাম ও ব্রিক্সটনে আরও তিনজন ছুরিকাহত হন।

এ নিয়ে লন্ডনে এ বছর খুন হওয়া ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়াল ৫৬। গত বছর একই সময় পর্যন্ত শহরটিতে নিহতের এ সংখ্যা ছিল ৭৭, যার মধ্যে ৪৮টিই ছিল ছুরিকাঘাতের ঘটনা।