অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তরে শুনানি ২০২০-র ফেব্রুয়ারিতে

সাড়াজাগানো ওয়েবসাইট উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে বহিঃসমর্পণ করা হবে কিনা, সে বিষয়ক পূর্ণাঙ্গ শুনানি আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 June 2019, 06:31 AM
Updated : 15 June 2019, 06:31 AM

শুক্রবার লন্ডনের একটি আদালতের বিচারক এমা আরবাথনট আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে শুনানি শুরুর দিন ঠিক করে দেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

৪৭ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে মার্কিন কৌঁসুলিরা গুপ্তচর আইন লংঘন ও সরকারি কম্পিউটারে আড়িপাতাসহ ১৮টি অভিযোগ এনেছে।

দোষী প্রমাণিত হলে উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতাকে কয়েক দশক কারাগারে কাটাতে হতে পারে।

শুক্রবার লন্ডনের একটি কারাগার থেকে ভিডিওলিংকের মাধ্যমে আদালতে হাজিরা দেন অ্যাসাঞ্জ। তার পরনে ছিল ধূসর টি-শার্ট; চোখে কালো ফ্রেমের চশমা।

“যুক্তরাষ্ট্রের সরকার গণমাধ্যমকে ভুলপথে পরিচালিত করার চেষ্টা করছে,” ওয়েস্টমিনস্টার আদালতে অভিযোগ অ্যাসাঞ্জের। 

মার্কিন সরকারের প্রতিনিধিত্ব করা আইনজীবী বেন ব্রেন্ডন এদিন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের পাসওয়ার্ড ভেঙে মূল্যবান তথ্যে হানা দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগের সারসংক্ষেপ পড়ে শোনান।

“আমি কোনোকিছুই হ্যাক করিনি,” নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন দুনিয়াজুড়ে ‘হুইসেলব্লোয়ার’ খ্যাত অ্যাসাঞ্জ।

২০১০ সালে তার প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ কূটনৈতিক ও সামরিক নথি ফাঁস করে দিয়ে বিশ্বজুড়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল।

এভাবে তথ্য উন্মোচিত হয়ে পড়ায় বিভিন্ন দেশে কাজ করা মার্কিন কর্মকর্তাদের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ ওয়াশিংটনের।

তবে অ্যাসাঞ্জ সমর্থকদের মতে, উইকিলিকস ওই গোপন নথিগুলো প্রকাশ করে আধুনিক রাষ্ট্রে ক্ষমতার অপব্যবহারের স্বরূপ উন্মোচিত করেছে। এ ফাঁসের ঘটনাকে মতপ্রকাশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘটনা হিসেবেও চিহ্নিত করছে তারা।

মার্কিন কূটনীতিক ও সামরিক নথি ফাঁসের পরপরই অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে সুইডেনে ধর্ষণ মামলা হয়। ওই মামলায় বহিঃসমর্পণ এড়াতে উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা ২০১২ সালে জামিনের শর্ত অগ্রাহ্য করে লন্ডনের একুয়েডর দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন।

এরপর টানা ৭ বছর ওই দূতাবাসেই অবস্থান করেছিলেন তিনি।

একুয়েডরের মার্কিনঘনিষ্ঠ সরকার চলতি বছরের এপ্রিলে তাদের দূতাবাস থেকে অ্যাসাঞ্জকে বের করে দিয়ে যুক্তরাজ্যের হাতে তুলে দিলে জামিনের শর্ত লংঘনের অভিযোগে তার বিচার শুরু হয়।

বিচারে উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতার ৫০ সপ্তাহের কারাদণ্ড হয়।

একুয়েডর দূতাবাস থেকে অ্যাসাঞ্জকে টেনে-হিঁচড়ে বের করার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তিসহ একের পর এক অভিযোগ উত্থাপন করতে থাকে।

অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে এ অভিযোগগুলোকে ‘সাংবাদিকের অধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর ভয়াবহ আক্রমণ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন তার আইনজীবী মার্ক সামারস।

অসুস্থ অ্যাসাঞ্জের চিকিৎসা চলছে জানালেও এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেননি তিনি।

উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতাকে কনস্যুলার সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে বলে শনিবার জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার বৈদেশিক সম্পর্ক ও বাণিজ্য বিভাগ (ডিএফএটি)।

“বহিঃসমর্পণের যে কোনো আবেদন যুক্তরাজ্য কর্তৃপক্ষের বিষয়। অস্ট্রেলীয় সরকার অন্য দেশের বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে পারে না,” ইমেইলে এমনটাই বলেছেন ডিএফএটির এক মুখপাত্র।