ভারতে নিরাপত্তার দাবিতে দেশজুড়ে চিকিৎসকদের ধর্মঘট

পশ্চিমবঙ্গের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের শারিরীক নিগ্রহের প্রতিবাদে দু'দিন ধরে চিকিৎসক ধর্মঘট চলার মধ্যে এবার তাতে সাড়া দিয়ে দেশজুড়ে ধর্মঘটে নেমেছে আরো হাজার হাজার চিকিৎসক।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 June 2019, 01:08 PM
Updated : 15 June 2019, 03:49 AM

তারা নিরাপত্তা চান। পশ্চিমবঙ্গ ও দিল্লি ছাড়াও শুক্রবার নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতিতে সামিল হয়েছে উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, মহারাষ্ট্র, কেরালা, পঞ্জাব, বিহার, আসামসমসহ সব রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজের হাজার হাজার চিকিৎসক।

কোথাও কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলন হয়েছে। কোথাও বা রাস্তায় নেমে প্রতিবা মিছিল করেছেন চিকিৎসকরা। ফলে এই সব হাসপাতালে আউটডোর এবং জরুরি পরিষেবা কার্যত বন্ধ।

সোমবার রাতে কলকাতার নীলরতন সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যু এবং চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে দুই জুনিয়ার ডাক্তার মারধরের শিকার হন। মৃত রোগীর প্রতিবেশী ও স্বজনরা লাঠি, ইট নিয়ে হাসপাতালে তাণ্ডব চালায়। তাদের ছোড়া ইটের আঘাতে পরিবহ নামের এক জুনিয়ার ডাক্তারের মাথার খুলিতে চোট লাগে।

হাসপাতালে ডাক্তারদের এ নিগ্রহের ঘটনার প্রতিবাদে গত দু’দিন ধরে কর্মবিরতিতে রাজ্যের জুনিয়র ডাক্তাররা।  চিকিৎসকদের এ বিক্ষোভ খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের অন্য সব সরকারি হাসপাতালেই। এবার সব মিলিয়ে আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, ১৭ জুন সোমবার সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে ধর্মঘট ডেকেছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ সংগঠন বলেছে, জরুরি ও রুটিন পরিষেবা চালু থাকবে। তবে আউটডোর এবং অন্যান্য পরিষেবা বন্ধ থাকবে।

এর আগে বৃহস্পতিবারই ঘোষণা করে বলা হয়েছিল, শুক্রবার হাসপাতালের সমস্ত পরিষেবা বন্ধ থাকবে। সারা দেশের সব মেডিক্যাল কলেজকেও এক দিনের এই প্রতীকী কর্মবিরতিতে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল দিল্লির এইমস- হাসপাতালের রেসিডেন্ট ডক্টর‌স অ্যাসোসিয়েশন।

সে ঘোষণা অনুযায়ীই শুক্রবার পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। কার্যত অবরুদ্ধ গোটা হাসপাতাল। আউটডোর, জরুরি পরিষেবা থেকে সমস্ত বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের গেটের বাইরে প্রচুর মানুষ ভিড় জমালেও কেউ সেবা পাননি।

মহারাষ্ট্র অ্যাসোসিয়েশন অব রেসিডেন্ট ডক্টরস এক দিনের কর্মবিরতি পালন করছে। সরকারি হাসপাতালগুলো আউটডোর-সহ অধিকাংশ পরিষেবা বন্ধ। শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবা চালু রাখা হয়েছে। যদিও অনেকেরই অভিযোগ, অনেক হাসপাতালেই জরুরি পরিষেবাও মেলেনি।

উত্তরপ্রদেশের বড় মেডিক্যাল কলেজ তথা হাসপাতালগুলোর মধ্যে অন্যতম বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির অধীন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল সায়েন্সেস (আইএমএস)। এ মেডিক্যাল কলেজেও পরিষেবা বন্ধ করে কর্মবিরতি করছেন চিকিৎসকরা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে প্রায় সব পরিষেবা।

কলকাতার আন্দোলনের রেশ ছড়িয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলঙ্গানাতেও। অন্ধ্র মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া এবং চিকিৎসকরাও আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে এখানে পরিষেবায় খুব বেশি প্রভাব পড়েনি।

এর বাইরে আরো বিভিন্ন রাজ্যে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়েছে। ছত্তীসগঢ়ে চিকিৎসকরা মাথায় প্রতীকী ব্যান্ডেজ বেঁধে জমায়েত করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।

এছাড়াও কোথাও প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে, কোথাও কালো ব্যাজ পরে পরিষেবা দিয়েছেন চিকিৎসকরা। কোথাও বা প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে পরিষেবা। বিক্ষোভ-মিছিলও হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের একাধিক মেডিক্যাল কলেজে।