হংকংয়ে পুলিশ-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষ

বিচারের জন্য লোকজনকে চীনের মূলভূখণ্ডে পাঠানোর সুযোগ রেখে আনা বহিঃসমর্পণ বিলের বিরুদ্ধে হংকংয়ের প্রতিবাদকারীদের বিক্ষোভ কর্মসূচি সহিংসতায় রূপ নিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 June 2019, 10:23 AM
Updated : 12 June 2019, 04:44 PM

বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে পুলিশ তাদের ওপর রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে, এর পাল্টায় প্রধান প্রধান সড়ক ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ভবন অবরোধ করে রাখা বিক্ষোভকারীরাও পুলিশের দিকে ইট-পাথর ছুড়ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

লাখো মানুষের প্রতিবাদের মধ্যেও হংকংয়ের বেইজিংপন্থি সরকার বহিঃসমর্পণ বিল নিয়ে অগ্রসর হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

বুধবার বিলটি নিয়ে আইন পরিষদে দ্বিতীয় দফা বিতর্ক হওয়ার কথা থাকলেও বিক্ষোভের মুখে ওই বিতর্ক স্থগিত করা হয়েছে।

বিতর্কটির নতুন সময়সীমা পরে সদস্যদের জানিয়ে দেয়া হবে, বলেছে আইন পরিষদে।

স্বায়ত্ত্বশাসিত হংকংয়ের আইন পরিষদে আগামী ২০ জুন বিলটি নিয়ে চূড়ান্ত ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো।

বিতর্কিত ওই বিলের দ্বিতীয় দফা বিতর্কের আগে বুধবার ভোররাত থেকেই বিক্ষোভকারীরা হংকংয়ের প্রধান প্রধান সড়ক ও সরকারি ভবনের আশপাশে অবস্থান নিয়ে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ দেখাচ্ছিল।

একদল বিক্ষোভকারী সরকারি একটি ভবনে ঢুকে পড়ার চেষ্টা চালালে পুলিশ তাদের দিকে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়া শুরু করে। এরপর থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

বিবিসি জানায়, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বুধবারের সংঘর্ষে ২১ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ওদিকে, হংকং সরকার বিবিসি’কে সংঘর্ষে ৭২ জন আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে। আহতদের বয়স ১৫ থেকে ৬৬। আহতদের দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে পুলিশের জলকামানের হাত থেকে বাঁচতে বিক্ষোভকারীদের ছাতা ব্যবহার করতে দেখা গেছে।

সংঘর্ষস্থলের দিকে বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্সকে ছুটতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের এ সংঘর্ষকে ‘দাঙ্গা’ হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করেছেন পুলিশ কমিশনার স্টিফেন লো ওয়াই-চুং।

এ ধরণের অপরাধে দায়ীদের ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান আছে বলেও তিনি সতর্ক করেছেন, জানিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।

পুলিশের বেঁধে দেওয়া নিরাপত্তা রেখা অতিক্রম করায় বিক্ষোভকারীদের ওপর অস্ত্র ব্যবহার করা ছাড়া উপায় ছিল না বলে জানিয়েছেন স্টিফেন।

“আমরা এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের নিন্দা জানাচ্ছি। আপনার মত প্রকাশে নিরপরাধ মানুষকে আঘাতের মুখে ফেলার কোনো দরকার নেই,” বলেছেন তিনি।

কালো মুখোশ ও দস্তানা পরা এক তরুণ বিক্ষোভকারী অবশ্য সংঘর্ষের আগেই ‘বিলটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমরা সরছি না’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।

২২ বছর আগে হংকংকে চীনের কাছে হস্তান্তরের সময় যুক্তরাজ্য শহরটির স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতা, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা অটুট রাখার প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিয়েছিল।

হংকংয়ের কারণেই চীনকে ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থাপনার’ নীতিতে চলতে হচ্ছে।