গুজরাটে আঘাত হানতে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় বায়ু, আগাম সতর্কতা

গুজরাটের দিকে এগিয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় বায়ুর মোকাবিলায় ভারতের পশ্চিম উপকূল থেকে প্রায় তিন লাখ লোককে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 June 2019, 06:16 AM
Updated : 12 June 2019, 06:16 AM

বায়ু বৃহস্পতিবার গুজরাট উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে আবাহওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ কারণে কচ্ছ থেকে দক্ষিণ গুজরাট পর্যন্ত ‘উচ্চ সতর্কতা’ জারি করা হয়েছে; জানিয়েছে এনডিটিভি। 

ওই উপকূলীয় জেলাগুলোর স্কুল ও কলেজ বুধ ও বৃহস্পতিবার বন্ধ রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘূর্ণিঝড় বায়ুর মোকাবিলা প্রস্তুতি পর্যালোচনা করেছেন। তার মন্ত্রণালয় গুজরাট ও কেন্দ্র শাসিত দিউকে সতর্কতামূলক বিস্তারিত পরামর্শ দিয়েছে।

বায়ু গুজরাট উপকূলের পোরবন্দর ও মাহুভার মধ্যবর্তী এলাকার ভেরাবল ও দিউ অঞ্চলের আশপাশ দিয়ে স্থলে উঠে আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সে সময় ওই এলাকাগুলোতে প্রবল ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

এতে খড়ের তৈরি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, ঘরবাড়ির ছাউনি ও টিনের চাল উড়ে যেতে পারে, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পাশাপাশি টেলিযোগাযোগ বিপর্যস্ত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া বিভাগ। বায়ু সড়ক ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি বয়ে আনতে পারে বলেও সতর্ক করেছ তারা।

উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর প্রস্তুতি নিতে ভারতের বিমান বাহিনীর কয়েকটি বিমান জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) সদস্যদের নিয়ে বুধবার সকালে গুজরাটের জামনগরে হাজির হয়েছে। এদের পাশাপাশি দেশটির সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড, বিএসএফ ও অন্যান্য সরকারি সংস্থাগুলোও দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়েছে। 

যেসব এলাকার ওপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে সেসব এলাকার প্রায় তিন লাখ বাসিন্দাকে বুধবার সকাল থেকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে গুজরাট ও দিউয়ের কর্তৃপক্ষগুলো। সরিয়ে নেওয়া এসব লোকজনকে ৭০০ ঘূর্ণিঝড় ও ত্রাণ কেন্দ্রে নিয়ে রাখা হবে।

‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে’ পরিণত হওয়া বায়ুর প্রভাবে ঝড় ও ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। এর প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে দেবভূমি দ্বারকা, পোরবন্দর, জুনাগড়, দিউ, গির সোমনাথ, আমরেলি ও ভাবনগর জেলার নিচু উপকূলীয় এলাকাগুলোতে বন্যা দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে তারা।  

গুজরাটের উপকূলীয় এলাকার জেলেদের আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত এবং মহারাষ্ট্রের জেলেদের ‍বুধবার ও বৃহস্পতিবার সাগরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার বিকাল থেকে দ্বারকা, সোমনাথ, সাসান ও কচ্ছ থেকে পর্যটকদের নিরাপদ এলাকায় সরে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি। পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে রাষ্ট্রীয় পরিবহন সেবাগুলোকে ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বায়ুর প্রভাবে আগামী দুই দিন গোয়া ও কোনকান অঞ্চলেও ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ সম্ভাবনা সামনে রেখে গোয়ায় ‘অরেঞ্জ’ অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

ভারতীয় কোস্টগার্ড জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় বায়ুর তাণ্ডব এড়ানোর জন্য ১০টি চীনা জাহাজ আশ্রয় প্রার্থনা করার পর মানবিক কারণে তাদের রত্নাগিরি বন্দরে অবস্থানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।