হোদেইদা বন্দর ঘিরে ফের তুমুল লড়াই

ইয়েমেনের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী হোদেইদার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে ফের তুমুল লড়াইয়ে জড়িয়েছে সৌদি আরব সমর্থিত সরকারপন্থি বাহিনী।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 May 2019, 11:04 AM
Updated : 16 May 2019, 11:04 AM

অস্ত্রবিরতি ভেঙে বুধবার থেকে শুরু হওয়া এ লড়াই শান্তি আলোচনার পট প্রস্তুতে হোদেইদা থেকে দুই পক্ষের সৈন্য প্রত্যাহারের সম্ভাবনাকে জটিল করে তুলবে, বলছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

শনিবার থেকে হুতিরা হোদেইদাসহ মোট তিনটি বন্দর থেকে সৈন্যদের সরিয়ে নেয়া শুরু করেছিল।

আমদানি করা খাদ্য ও মানবিক ত্রাণ সাহায্য ইয়েমেনে ঢোকানোর এটিই প্রধান পথ। বন্দরটি অবাধ হলে অনাহারের ঝুঁকিতে থাকা লাখ লাখ ইয়েমেনির বাঁচার উপায় মিলবে।

হুতি ও সৌদি সমর্থিত বাহিনীর চার বছরের যুদ্ধ ইয়েমেনের অসংখ্য মানুষকে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।

দেশটির পশ্চিমা সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বু মানসুর হাদি ও তার সরকারকে উৎখাত করে ইরান সমর্থিত হুতিরা রাজধানী সানার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়ার পর ২০১৫ সালের মার্চে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন সুন্নি দেশগুলোর একটি জোট এ যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করে।

পর্যবেক্ষকরা ইয়েমেনের এ যুদ্ধকে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে ‘ছায়া যুদ্ধ’ হিসেবেও বিবেচনা করছেন।

রয়টার্স বলছে, বুধবার হোদেইদার বিভিন্ন অংশে হুতি ও সৌদি জোট সমর্থিত বাহিনীর মধ্যে নতুন করে লড়াই শুরুর খবর পাওয়া গেছে। 

হুতিরা সৌদি আরবের দুটি তেলের পাম্পে ড্রোন হামলার দায় স্বীকার করার একদিন পর হোদেইদা ঘিরে ফের লড়াই শুরু হল।

সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের অন্যতম অংশীদার সংযুক্ত আরব আমিরাতের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, হুতিদের যে কোনো হামলার ‘উপযুক্ত জবাব’ দেয়া হবে, তবে সৌদি জোট এখনও হোদেইদা বন্দর ঘিরে যে সমঝোতা হয়েছে তা বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ইয়েমেনে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক মিশনের প্রধান লেফটেনেন্ট জেনারেল লোলেসগার্ড বলেছেন, বুধবার থেকে হোদেইদাতে যুদ্ধবিরতি লংঘনের মাত্রা বাড়লেও তা ‘চিন্তিত হওয়ার মতো নয়’।

‘এখন আমরা যুদ্ধবিরতি লংঘনের যে সংখ্যা দেখছি, এটা অনেকটা রমজান মাস শুরুর আগের কয়েকদিনের মতো,” বলেছেন তিনি।

গত বছরের ডিসেম্বরে সুইডেনের রাজধারী স্টকহোমে ইয়েমেনের পশ্চিমাস্বীকৃত সরকার ও হুতি প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠকে অস্ত্রবিরতি ও হোদেইদা থেকে দুই পক্ষের সৈন্য প্রত্যাহারে সমঝোতা হয়েছিল।

ওই সমঝোতার প্রথম ধাপে তিনটি বন্দর- হোদেইদা, সালিফ ও রাস ইসা থেকে হুতিদের সৈন্য প্রত্যাহারের কথা ছিল। গত সপ্তাহ থেকে তারা সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া শুরু করে বরে জানিয়েছে রয়টার্স।

লোলেসগার্ড বলেছেন, দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে সমঝোতা না হলে পশ্চিমা সমর্থিত সরকারি বাহিনী ও সৌদি জোট প্রথম ধাপ মেনে নিয়ে সৈন্য প্রত্যাহার করতে পারছে না।

“আমরা দ্বিতীয় ধাপের জন্য নিখুঁত কোনো পরিকল্পনা পাবো না। উভয় পক্ষকেই এ ব্যাপারে ছাড় দিতে হবে। এটা আমরা দুই সপ্তাহের মধ্যেই করে ফেলতে পারি; আর যদি ইচ্ছা না থাকে, তাহলে কয়েক মাসও পেরিয়ে যেতে পারে,” বলেছেন তিনি।