ভেনেজুয়েলা: ক্ষমতা ধরে রেখেছেন মাদুরো

প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে হটাতে ভেনেজুয়েলার ‘ইতিহাসে সবচেয়ে বড়’ সরকারবিরোধী বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন বিরোধীলীয় নেতা হুয়ান গুইদো, কিন্তু তার এ পদক্ষেপেও দেশটিতে রাজনৈতিক পরিবর্তনের জোরালো কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 May 2019, 04:25 AM
Updated : 2 May 2019, 04:25 AM

মঙ্গলবার ভেনেজুয়েলার ইতিহাসে সরকারবিরোধী ‘বৃহত্তম মিছিলের’ ডাক দিয়ে এক টুইটে গুইদো জানিয়েছিলেন, মাদুরোকে হটাতে তার নেওয়া পদক্ষেপের এ চূড়ান্ত পর্বে ‘লাখ লাখ ভেনেজুয়েলান’ রাস্তায় নেমে আসবে।

কিন্তু বুধবার রাজধানী কারাকাসে জড়ো হওয়া প্রতিবাদকারীদের অনেকে শেষ বিকালের দিকে বাসায় ফিরে যায় বলে খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

এরপর কট্টর সরকারবিরোধী যেসব প্রতিবাদকারী তখনও রাস্তায় অবস্থান করছিল তাদের সরিয়ে দিতে কাঁদুনে গ্যাস ব্যবহার করে ন্যাশনাল গার্ড। এ সময় একজন আহত হলে অন্যরা একটি ফাস্ট এইড ট্রাকে করে তাকে সরিয়ে নেয়। 

স্থানীয় একটি এনজিও জানিয়েছে, কারাকাসে প্রতিবাদ চলার সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ এক তরুণীকে হাসপাতালে নেওয়ার পর অস্ত্রোপচারের সময় সে মারা যায়। 

একজন নারী গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর মারা গেছেন বলে গুইদো এক টুইটে নিশ্চিত করেছেন।

তাকে সমর্থন দেওয়ার জন্য গুইদো সামরিক বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানালেও সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃবৃন্দ এখনও পর্যন্ত মাদুরোর প্রতিই অনুগতই আছেন।

“সরকার যদি মনে করে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে গেছি, তাহলে তারা কল্পনাও করতে পারছে না। আমাদের রাজপথে থাকতে হবে,” রাজধানীতে জড়ো হওয়া নিজের হাজারো সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন গুইদো।

কিন্তু এই পর্যায়ে এসে গুইদো এরচেয়ে বেশি আর কী করতে পারবেন তা পরিষ্কার নয় বলে মন্তব্য রয়টার্সের।

ভেনেজুয়েলার বিরোধীদল প্রায়ই মাদুরোবিরোধী বিশাল প্রতিবাদের আয়োজন করে, কিন্তু গভীর অর্থনৈতিক সঙ্কট ও মুদ্রাস্ফীতি থাকার পরও তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারে না।

কয়েকজন প্রতিবাদকারী জানিয়েছেন, মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে এমন প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন তারা।

কারাকাসের কেন্দ্রস্থল থেকে আসা ৫২ বছর বয়সী সেবিকা লায়লা আমেজকিতা বলেন, “আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখা দরকার। ২০ বছরেও তারা যা করতে পারেনি গুইদো তা তিন মাসে করে দেখিয়েছেন, আমাদের অবশ্যই ধৈর্য ধরতে হবে।” 

কিন্তু গুইদো নিজেকে ‘অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট’ ঘোষণার পর তিন মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় অনেকেই হতাশ।

গত বছর ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাদুরো পুনঃনির্বাচিত হন। কিন্তু তার পুনঃনির্বাচিত হওয়াকে অবৈধ ঘোষণা করে নিজেকে ‘অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট’ ঘোষণা করেছিলেন ভেনেজুয়েলার জাতীয় পরিষদের প্রধান গুইদো। 

তাকে ভেনেজুয়েলার বৈধ রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশ। অপরদিকে রাশিয়া, চীন, কিউবা, তুরস্ক, ইরান মাদুরোকেই বৈধ রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দেখছে।

ভেনেজুয়েলার রাজনৈতিক অচলাবস্থা যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণ হচ্ছে। ওপেক সদস্য দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য দেশ দুটি একে অপরকে দায়ী করেছে।