কিম রাশিয়ায়, পুতিনের সঙ্গে বৈঠক বৃহস্পতিবার

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে অবস্থিত ভ্লাদিভস্তকে পৌঁছেছেন উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2019, 10:32 AM
Updated : 24 April 2019, 11:37 AM

বুধবার একটি সাঁজোয়া ট্রেনে চেপে কিম নিজ দেশের সীমান্ত থেকে কয়েক ঘণ্টা দূরের রুশ বন্দর নগরীটিতে পৌঁছান বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

বৃহস্পতিবার ভ্লাদিভস্তকের কাছে রাস্কি আইল্যান্ডের ফার ইস্টার্ন ফেডারেল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস কমপ্লেক্সে পুতিনের সঙ্গে উত্তর কোরীয় নেতার শীর্ষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে ২০১২ সালে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কোঅপারেশনের সম্মেলনও এই কমপ্লেক্সেই হয়েছিল।

পুতিন এর আগে ২০০২ সালে উত্তর কোরিয়ার তখনকার শীর্ষ নেতা কিম জং ইলের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন।

ইল ২০১১ সালে ‘পুতিনের লেফটেনেন্ট’ খ্যাত দিমিত্রি মেদভেদেভের সঙ্গেও বসেছিলেন। মেদভেদভ তখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

এবারের সফরে কিম রাশিয়ার কাছ থেকে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।

উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার বৈঠকে কোরীয় উপদ্বীপের নিরস্ত্রীকরণ প্রসঙ্গটিই আলোচনার বেশিরভাগ অংশ জুড়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন ক্রেমলিনের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক এক উপদেষ্টা।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় অচলাবস্থার মধ্যেই মস্কোর সমর্থন পেতে পুতিনের দ্বারস্থ হয়েছেন উত্তরের নেতা।

তবে তিনি চাইলেও রাশিয়া এখনি পিয়ংইয়ংয়ের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার প্রস্তাবে সমর্থন দেবে না বলেই অনুমান বিশ্লেষকদের। 

রাশিয়ার জন্যও এই সফরের গুরুত্ব ‘কম নয়’। তারা যে এখনো বিশ্বের অন্যতম প্রধান শক্তি, কিমের সফর তা প্রমাণেরও সুযোগ করে দিয়েছে, বলছেন পর্যবেক্ষকরা।

বুধবার ভ্লাদিভস্তকের কোয়ায়সাইড রেলস্টেশনে উত্তরের নেতার ট্রেন এসে থামলে রুশ কর্মকর্তারা তাকে সাদর অভ্যর্থনা জানান।

ট্রেনটি প্ল্যাটফর্মে থামার বেশ কিছুক্ষণ পর কিমের বগির দরজা খোলে। হাসিমুখে বেরিয়ে এসে এরপর উত্তরের নেতা লাল গালিচায় পা রাখেন।

এর আগে সীমান্তের এক স্টেশনে যাত্রাবিরতির সময় কিম রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে পুতিনের সঙ্গে কার্যকর ও সফল একটি বৈঠক হতে যাচ্ছে বলে প্রত্যাশ্য ব্যক্ত করেন।

“দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং কোরীয় উপদ্বীপের শান্তি আলোচনার সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন নিয়েই আমাদের মধ্যে আলোচনা হবে বলে আশা করছি,” বলেন তিনি।

রেলস্টেশনের সামনের স্কয়ারে অনার গার্ড প্রদর্শনের পর উত্তরের নেতা কালো লিমুজিনে চেপে রাস্কি আইল্যান্ডের পথে রওনা হন। সেখানেই তার থাকার ব্যবস্থা হয়েছে বলে জানিয়েছে রুশ গণমাধ্যম।

হ্যানয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর উত্তর কোরিয়ার আরও বিকল্প আছে এবং বিশ্বনেতাদের কাছে তাদের চাহিদা যে ‘এখনো ফুরায়নি’ এটা প্রমাণ করতেই কিমের এবারের রাশিয়া সফর বলে মন্তব্য করেছেন ভ্লাদিভস্তকের ফার ইস্টার্ন ফেডারেল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আর্তিওম লুকিন।

“ওয়াশিংটন, বেইজিং ও সিউলের ওপর বেশি নির্ভরশীল থাকতে চান না কিম। কোরীয় উপদ্বীপে মস্কোও যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় কিম-পুতিনের এ বৈঠকের মাধ্যমে তা পুনঃনিশ্চিত করার তাগিদ আছে রাশিয়ারও। রাশিয়ার আন্তর্জাতিক মর্যাদার ক্ষেত্রেও এ বৈঠক বেশ গুরুত্বপূর্ণ,” বলেছেন তিনি।