সিনামন হোটেল: নাস্তার প্লেট হাতেই বিস্ফোরণ ঘটায় আত্মঘাতী

বিস্ফোরণ ঘটানোর আগে শ্রীলঙ্কার সিনামন গ্রান্ড হোটেলের ইস্টার সানডে ব্রেকফাস্ট বুফের লাইনে শান্তভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন আত্মঘাতী হামলাকারী।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 April 2019, 05:42 AM
Updated : 22 April 2019, 06:00 AM

হাতে প্লেট নিয়ে খাবারের অপেক্ষায় থাকার ভান করা এই ব্যক্তি শনিবার রাতে কলম্বোর এই পাঁচ তারকা হোটেলটিতে উঠেছিলেন, তখন নিজের নাম মোহাম্মদ আজম মোহাম্মদ বলে জানিয়েছিলেন তিনি। 

লাইনের সামনে আসার পর যখন তার প্লেটে খাবার দেওয়া হবে ঠিক তখনই হোটেলটির জনাকীর্ণ রেস্তোরাঁয় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটান তিনি, জানিয়েছেন সিনামন হোটেলের এক ম্যানেজার।  

বিস্ফোরক তার পিঠে বাঁধা ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে আন্তর্জাতিক একটি বার্তা সংস্থাকে তিনি বলেন, “তখন সাড়ে ৮টা বাজে। ব্যস্ত সময়। অনেকগুলো পরিবার ছিল। লাইনের সামনে আসার পরই সে বিস্ফোরণ ঘটায়।”

রোববার সাপ্তাহিক ছুটি ও ইস্টার সানডের পরব থাকায় সিনামন গ্রান্ডের ট্যাপ্রোবেন রেস্তোরাঁয় তখন বহু লোকের ভিড় ছিল। 

“তাৎক্ষণিকভাবে যারা নিহত হন তাদের মধ্যে আমাদের যে ম্যানেজার অতিথিদের স্বাগত জানাচ্ছিলেন তিনিও আছেন,” বলেছেন তিনি। 

তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের মধ্যে আত্মঘাতীও আছেন। পুলিশ তার শরীরের কিছু অংশ অটুট অবস্থায় পেয়ে সেগুলো নিয়ে যায়।

এই আত্মঘাতী শ্রীলঙ্কান ছিলেন বলে জানিয়েছেন হোটেলটির ম্যানেজাররা। তার দেওয়া ঠিকানাটি ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। ব্যবসার কাজে সে কলম্বো এসেছে বলে তাদের জানিয়েছিল।

শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনের কাছের এই হোটেলটিতে বোমা বিস্ফোরণের পরপরই স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের কমান্ডোরা ঘটনাস্থলে চলে আসেন।

কলম্বোর অন্য দুই পাঁচ তারকা হোটেল শাংরি-লা ও কিংসবারিতেও প্রায় একই সময় হামলা চালানো হয়। ওই সময়েই কলম্বোসহ তিনটি শহরের তিনটি গির্জায় ইস্টার সানডের প্রার্থনারত কয়েক হাজার লোকের মধ্য আরও তিনটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। 

কলম্বোর ঐতিহাসিক ক্যাথলিক গির্জা সেন্ট অ্যান্থনির শ্রাইনে ঘটা বিস্ফোরণটির প্রচণ্ড ধাক্কায় ছাদের অধিকাংশ উড়ে যায়। গির্জার মেঝেতে ছাদের টাইলস, ভাঙা কাঁচ ও ছিন্নভিন্ন কাঠের টুকরা রক্তে মাখামাখি হয়ে মেঝেতে পড়ে ছিল।  

কারা এ হামলাগুলো চালিয়েছে শ্রীলঙ্কার কর্তৃপক্ষ তা জানায়নি।

নিহত ২৯০ জনের মধ্যে ৩৫ জন বিদেশি। এদের অধিকাংশই হোটেলগুলোতে ঘটা বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।