ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমছেই

কয়েক মাস ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা ক্রমাগত নিচের দিকে নামছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও জরিপকারী প্রতিষ্ঠান ইপসসের করা পরপর তিনটি জনমত জরিপে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2019, 04:58 AM
Updated : 20 April 2019, 05:29 AM

গত সপ্তাহে করা সর্বশেষ জরিপে ট্রাম্পের গ্রহণযোগ্যতা কমতে কমতে ৩৭ শতাংশে পৌঁছেছে বলেও জানিয়েছে তারা।

চলতি বছরে করা জরিপগুলোর মধ্যে এবারই মার্কিন প্রেসিডেন্টের কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষের এত কম সমর্থন দেখা গেল।

২০১৬-র মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে রিপাবলিকান শিবিরের সঙ্গে রাশিয়ার কোনো আঁতাত হয়েছিল কিনা, সে বিষয়ে বিচার বিভাগের সম্পাদিত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা নিয়ে নতুন এ জরিপ করে রয়টার্স/ইপসস। 

৪৪৮ পৃষ্ঠার বিস্তারিত ওই প্রতিবেদনে ট্রাম্প শিবির-মস্কো আঁতাতের কোনো প্রমাণ পাওয়া না গেলেও তদন্তে বাধা দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মুলারকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে ধারণা দেওয়া হয়েছে।

২২ মাসের ওই তদন্তে মুলার কর ফাঁকি, জালিয়াতি, মিথ্যা বলাসহ বিভিন্ন অপরাধে যে ৩৪ জনকে অভিযুক্ত করেছেন, তাদের মধ্যে ট্রাম্পের সাবেক ছয় সহযোগীও আছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট শুরু থেকেই তার শিবিরের সঙ্গে রাশিয়ার ‘সম্ভাব্য আঁতাতের’ তদন্তকে ‘উইচ হান্টিং’ হিসেবে অভিহিত করে আসছেন।

তদন্তের উদ্যোক্তারা তাকে অবৈধ উপায়ে ক্ষমতাচ্যুত চেষ্টা করেছিলেন বলেও অভিযোগ তার।

ট্রাম্প-রাশিয়া সংযোগ নিয়ে মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) তদন্তে প্রেসিডেন্ট বাধা দিয়েছিলেন কিনা, মুলারের তদন্তে তাও খতিয়ে দেখার কথা ছিল।

মার্চে সারসংক্ষেপ প্রকাশের পর রিপাবলিকান শীর্ষ নেতারা বিচার বিভাগের এ তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন।

“কোনো আঁতাত হয়নি, বাধাও দেওয়া হয়নি। চূড়ান্ত ও পূর্ণাঙ্গ দায়মুক্তি,” বলেছিলেন ট্রাম্প।

বৃহস্পতিবার কংগ্রেসে মুলারের ৪৪৮ পাতার ‘সম্পাদিত ও পূর্ণাঙ্গ’ তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। এতে স্পেশাল কাউন্সেল লিখেছেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অপরাধ করেছেন- এরকম কোনো উপসংহার এই প্রতিবেদন টানছে না। তবে এই প্রতিবেদন তাকে দায়মুক্তিও দিচ্ছে না।” 

ওইদিন সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা নিয়ে জরিপ করে রয়টার্স/ইপসস। জরিপে অংশ নেওয়া ১০০৫ জনের মধ্যে ৯২৪ জনই মুলারের প্রতিবেদনের বিষয়ে অবগত বলে জানিয়েছেন।

জরিপে ট্রাম্পের প্রতি এখন মাত্র ৩৭ শতাংশ মার্কিনির আস্থার বিষয়টি উঠে এসেছে।

অংশ নেয়া অর্ধেকের মতে- ‘২০১৬ সালের নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে ট্রাম্প কিংবা তার শিবিরের কেউ না কেউ রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করেছিলেন’। ৫৮ শতাংশের ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ‘রাশিয়া সংযোগ’ বিষয়ক তদন্ত বন্ধে চেষ্টা করেছিলেন।

জরিপে অংশ নেওয়া ৪০ শতাংশ ট্রাম্পকে এখনই সরিয়ে দেয়ার পক্ষে। অবশ্য ৪২ শতাংশ বলছেন উল্টোটা।

মার্চে মুলারের তদন্ত প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ প্রকাশের পর হওয়া জনমত জরিপে ট্রাম্পের পক্ষে জনসমর্থন দেখা গিয়েছিল ৪৩ শতাংশ; এপ্রিলের ১৫ তারিখের জরিপে এ হার নেমে যায় ৪০ শতাংশে। 

এসব জরিপে মার্কিনিদের মধ্যে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিগত দূরত্বের বিষয়টি স্পষ্ট হচ্ছে বলেও জানিয়েছে রয়টার্স।

ডেমোক্রেট সমর্থকরা প্রেসিডেন্টকে তুলোধুনা করলেও বেশিরভাগ রিপাবলিকান যে এখনো ট্রাম্পেই মজে আছেন তাও বোঝা যাচ্ছে, বলছে তারা।