নাজিব রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিল ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বরহাদ (ওয়ানএমডিবি) থেকে ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ, অপরদিকে তিনি কোনো অন্যায় করেননি বলে দাবি নাজিবের।
কৌশলগত বিনিয়োগের মাধ্যমে মালয়েশিয়ার অর্থনীতিকে আরও জোরদার করার জন্য রাষ্ট্রীয় ওই তহবিলটি গঠন করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে বিবিসি।
তার বদলে এই তহবিলের অর্থ বিলাসী জীবনযাপন, হলিউডের একটি চলচ্চিত্র ও একটি সুপারইয়টের পেছনে ব্যায় করা হয় বলে অভিযোগ।
নাজিবের বিরুদ্ধে অনেকগুলো ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু ওই আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়ে এবারই প্রথম বিস্তৃত বিচার শুরু হলো।
মোট ৪২টি অভিযোগের মোকাবিলা করছেন নাজিব, এর অধিকাংশই ওয়ানএমডিবি-র সঙ্গে সম্পর্কিত।
বুধবার এ সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি অভিযোগের বিচার শুরু হয়েছে। এর কেন্দ্রে আছে ওয়ানএমডিবি-র একটি ইউনিট এসআরসি ইন্টারন্যাশনাল থেকে নাজিবের ব্যক্তিগত ব্যাংক একাউন্টে চার কোটি ২০ লাখ মালয়েশীয় রিঙ্গিত সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ।
এসব অভিযোগে নাজিব নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
এ মামলাটি যে অর্থ সরানো নিয়ে তা নাজিবের আত্মসাৎ করা ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের অতিরিক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নাজিবের মামলার শুনানি ১২ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এ মামলা সংক্রান্ত আবেদনগুলোর শুনানিতে সময় লাগায় মামলা শুরু হতে দেরি হয়।
ওয়ানএমডিবি-র জন্য অর্থ সংগ্রহকালে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণার জন্য ওয়াল স্ট্রিটের প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাক্সের বিরুদ্ধেও ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করেছে মালয়েশিয়া সরকার।
তারা কোনো অপরাধ করেনি বলে দাবি করেছে ব্যাংকটি এবং তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো ‘জোরালোভাবে মোকাবিলা করা হবে’ বলে জানিয়েছে তারা।
আন্তর্জাতিক অর্থ পাচার সংক্রান্ত অভিযোগগুলোর তদন্তকারী অন্যতম দেশ যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে। তদন্তের পর তারা জানায়, এই তহবিলের সাড়ে চারশ কোটি ডলার আত্মসাৎ করা হয়েছে।
‘মালয়েশিয়ার এক নম্বর কর্মকর্তা’ বলে অভিহিত এক ব্যক্তি ওয়ানএমডিবি থেকে ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার অর্থ গ্রহণ করেছেন বলে জানান মার্কিন তদন্তকারীরা। পরে ওই ‘ব্যক্তি’ নাজিব রাজাক বলে নিশ্চিত হয়।
কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন, এসব অর্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার স্ত্রী রোসমাহ মনসুরের বিলাসী জীবনযাপনের পেছনে খরচ করা হয়।
রোসমাহও দুর্নীতির অনেকগুলো অভিযোগের মোকাবিলা করছেন।
প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে নাজিবকে সব ধরনের অপরাধ থেকে মুক্ত বলে ছাড়পত্র দিয়েছিল মালয়েশিয়ার কর্তৃ্পক্ষ।