ঘড়ির কাঁটায় আর পরিবর্তন চায় না ইইউ

জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য ইউরোপজুড়ে গ্রীষ্মকালে ঘড়ির কাঁটা বাধ্যতামূলকভাবে এক ঘন্টা এগিয়ে দেওয়ার যে নিয়ম চালু আছে তা এবার বন্ধ করার প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 March 2019, 04:15 PM
Updated : 26 March 2019, 04:15 PM

এ প্রস্তাবের আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত দেশগুলোর জন্য ২০২১ সাল থেকে দুইটি পথ খোলা থাকবে- এর মধ্যে তারা একটিকে বেছে নেবে। হয় তারা ঘড়ির কাঁটা পরিবর্তনের বর্তমান ব্যবস্থা চালু রাখবে, নয়ত বছরে দুইবার ঘড়ির কাঁটা পরিবর্তনের এ নিয়ম বাদ দেবে। এ বিষয়ে মন্ত্রীদের মতামতও গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

বর্তমান ব্যবস্থায় ‘ডেলাইট সেভিংস' বা দিনের আলো সংরক্ষণের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো বছরে দুই বার ঘড়ির কাঁটায় পরিবর্তন আনে৷ আইন করে এ ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর থেকে প্রতিবছরই মার্চের শেষ রোববার ঘড়ির কাঁটা এক ঘণ্টা এগিয়ে দেওয়া হয়, আর অক্টোবরের শেষ রোববারে তা আবারও পিছিয়ে আগের সময়ে ফিরে যাওয়া হয়।

জনমত জরিপে দেখা গেছে, ইউরোপের জনগণ এখন আর এ নিয়ম পছন্দ করছে না। ৮৪ শতাংশ ইউরোপীয়ই নিয়মটি বাদ দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। যার ভিত্তিতে গত বছর ইউরোপীয় কমিশন ঘড়ির কাঁটা পরিবর্তন না করার বিষয়ে এ খসড়া প্রস্তাব তৈরি করে।

এ প্রস্তাব নিয়েই ভোটাভুটি করেছেন ইইউ পার্লামেন্ট সদস্যরা। প্রস্তাবের পক্ষে পড়েছে ৪১০ ভোট এবং বিপক্ষে পড়েছে ১৯২ ভোট।

ডেলাইট সেভিং টাইম (ডিএসটি):

ইইউ’র অভ্যন্তরীণ বাজার ব্যবস্থার গতি আরও মসৃণ করতে এবং জ্বালানি খরচ কমাতে ২০০১ সাল থেকে ইইউভূক্ত দেশগুলোতে ডিএসটি বাধ্যতামূলক করা হয়।

কিন্তু বাস্তবে ডিএসটির কারণে জ্বালানি খরচ সেই অর্থে কমেনি। কারণ ইইউ মূলত চীন, রাশিয়া ও তুরস্কের সঙ্গে বাণিজ্য করে এবং দেশগুলোর কোনোটিতেই ডিএসটি কার্যকর নয়।

অন্যদিকে, বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ঘড়ির কাঁটার পরিবর্তনের কারণে মানব দেহের উপর তার নেতিবাচ প্রভাব পড়ার কথা বলা হয়েছে।

ইইউ কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘মানুষের উপর দেহঘড়ির প্রভাব যতটা ভাবা হয়েছিল কার্যত তার থেকে অনেক বেশি প্রভাব ফেলে’ বলে নতুন সব গবেষণায় জানা গেছে।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ-ক্লদ জাঙ্কার বলেন, “যখন ইইউ বছরে দুইবার ঘড়ির কাঁটা পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছিল তখন কেউ তা সমর্থন করেনি।”

“ঘড়ির কাঁটা পরিবর্তন অবশ্যই বন্ধ হবে। জনগণ গ্রীষ্মে নাকি শীতের সময়ে বাস করবে সে সিদ্ধান্ত সদস্যভূক্ত দেশগুলোকেই নিতে হবে।”

নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, সদস্যভূক্ত দেশগুলোর সরকারকে হয় গ্রীষ্মকালের সময়কে স্থায়ী হিসেবে বেছে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে ২০২১ সালের মার্চের শেষ রোববার চূড়ান্তবার ঘড়ির কাঁটা পরিবর্তন করতে হবে।

অথবা যদি দেশগুলো পার্মানেন্ট স্ট্যান্ডার্ড টাইম (যেটাকে শীতকালীন সময় বলা হয়) বেছে নেয় তবে ২০২১ সালের অক্টোবরের শেষ রোববার চূড়ান্তবার ঘড়ির কাঁটা পরিবর্তন করতে হবে।