গাজায় ইসরায়েল-হামাস সংঘর্ষের পর যুদ্ধবিরতি

গাজা থেকে ছোড়া দূরপাল্লার রকেটে সাত নাগরিক আহত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটির বিভিন্ন স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 March 2019, 10:06 AM
Updated : 26 March 2019, 10:06 AM

সোমবার ইসরায়েল গাজা সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে বলেও জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

দিনব্যাপী পাল্টাপাল্টি হামলার পর মিশরের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষ একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েল।

মঙ্গলবার রাতে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও দক্ষিণ ইসরায়েলে সাইরেনের শব্দ শোনা গেছে। তখনও স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রগুলোর দিকে ছুটে যেতে দেখা গেছে।  

ওই একইসময় ইসরায়েলি বিমানগুলোও গাজার দুটি স্থাপনায় হামলা চালায় বলে ফিলিস্তিনিরা জানিয়েছেন।

সোমবার সকালে ফিলিস্তিনিদের ছোড়া একটি রকেটে তেল আবিবের কাছে একটি বাড়িতে আঘাত হানে। এতে সাত ইসরায়েলি আহত হওয়ার পর দুই পক্ষের মধ্যে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়।

রকেট হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েলিবাহিনী। এরপর থেকেই একের পর এক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গাজা; ফাঁকা রাস্তায় শোনা যায় অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের প্রতিধ্বনি।

ইসরায়েলি হামলায় পাঁচ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

ইসরায়েলি বিমানগুলোর প্রাথমিক হামলাস্থলের মধ্যে গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক দল হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়ার কার্যালয়ও ছিল, তবে হামলার আগেই হানিয়া কার্যালয় ছেড়ে অন্যত্র চলে যান।

সোমবার রাতে হামাস যোদ্ধারাও ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে একের পর এক রকেট ছোড়ে। এর বেশিরভাগই গুলি করে ভূপাতিত করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনী। বাকিগুলো ফাঁকা এলাকায় গিয়ে পড়ে।

ইসরায়েলের জাতীয় নির্বাচনের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে নতুন এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল। দুর্নীতির অভিযোগে জেরবার নেতানিয়াহুর জন্য এবারের নির্বাচন কঠিন পরীক্ষা হয়ে দেখা দিতে পারে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের।

তার সঙ্গে সাবেক এক জেনারেলের নেতৃত্বাধীন মধ্যপন্থি জোটের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে সিরিয়ার কাছ থেকে দখল করা গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলের ‘সার্বভৌমত্বে’ যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির দিনই হামাসের সঙ্গে নতুন এ সংঘর্ষে জড়াল তেল আবিব।

ওই স্বীকৃতির স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন নেতানিয়াহু। গাজা থেকে ছোড়া রকেট হামলার খবর পেয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক শেষেই সফর সংক্ষিপ্ত করেই দেশে ফিরে যাওয়ার ঘোষণা দেন এ ডানপন্থি নেতা।

“ইসরায়েল এটি সহ্য করবে না, আমি সহ্য করবো না। আমি যেভাবে বলছি, ইসরায়েল সর্বশক্তি দিয়ে এই বিক্ষিপ্ত আগ্রাসন মোকাবিলা করবে,” বলেন তিনি।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও ‘নিজেকে রক্ষায় ইসরায়েলের পূর্ণ অধিকার’ আছে বলে মন্তব্য করেছেন।

২০১৪ সালে সর্বশেষ হামাসের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধে জড়িয়েছিল ইসরায়েল। ওই যুদ্ধে নিহত দুই হাজার ১০০ ফিলিস্তিনির মধ্যে অধিকাংশই বেসামরিক ছিল বলে সেসময় জানিয়েছিল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সাত সপ্তাহ ধরে চলা ওই যুদ্ধে ইসরায়েলের ৬৬ সেনা ও ৭ বেসামরিক নিহত হয়েছিল।