আইএস পরাজিত, ‘খিলাফত’ শেষ: এসডিএফ

সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) পরাজিত হওয়ার পর জঙ্গিগোষ্ঠীটির ‘খিলাফত’ শেষ হয়েছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বিদ্রোহী বাহিনী সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2019, 12:38 PM
Updated : 23 March 2019, 01:13 PM

শনিবার এসডিএফের যোদ্ধারা জঙ্গিগোষ্ঠীটির শেষ ঘাঁটি বাঘুজে বিজয় নিশান উড়িয়েছে বলে খবর বিবিসির।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, এসডিএফের মুখপাত্র মুস্তাফা বালি টুইটারে লিখেছেন, “বাঘুজ মুক্ত হয়েছে। দায়েশের বিরুদ্ধে সামরিক বিজয় সম্পন্ন হয়েছে। তথাকথিত খিলাফতের পুরোপুরি পতন হয়েছে।”

বাঘুজের নিকটে এক বিজয় অনুষ্ঠানে এসডিএফের একটি ব্যান্ডদল যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পতাকা ও এসডিএফের দলীয় পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে মার্কিন জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেছে। এসডিএফের পুরুষ ও নারী নেতৃবৃন্দ সামনে বসে তা প্রত্যক্ষ করেছে।

বাঘুজ থেকে রয়টার্সের এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, শনিবার সকালেও গোলাগুলি ও মর্টারের গোলাবর্ষণ অব্যাহত ছিল। এ সময় এসডিএফের এক কমান্ডার সতর্ক করে বলেছেন, জঙ্গিদের স্লিপার সেলগুলো হামলার ষড়যন্ত্র করতে থাকায় আসছে সময়গুলো আরও কঠিন হতে পারে।

প্রচুর বেসামরিক লোক বের হয়ে আসার পর বাঘুজে চূড়ান্ত অভিযান শুরু করে এসডিএফ। দুপক্ষের চূড়ান্ত লড়াই কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হয়। শেষ পর্যন্ত নতুন বছর ‘নওরোজ’ শুরুর সময়টিতে জয় পাওয়ায় এসডিএফের অনেক কুর্দি যোদ্ধার জন্য জয়টি মধুরতম হয়ে উঠেছে। 

এক সময় সিরিয়া ও ইরাকের ৮৮ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। বাঘুজের লড়াইয়ে পরাজিত হওয়ার পর অবশিষ্ট শেষ এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারালো তারা। কিন্তু এরপরও গোষ্ঠীটিকে বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। 

পতন হওয়া আইএসের শেষ ঘাঁটি বাঘুজের আবাসিক এলাকা থেকে ধোঁয়া উঠছে; ২০ মার্চ, ২০১৯। রয়টার্স

কারণ সামরিকভাবে পরাজিত হলেও সিরিয়া ও ইরাকে আইএসের উপস্থিতি বজায় আছে এবং নাইজেরিয়া, ইয়েমন, আফগানিস্তান ও ফিলিপিন্সে তাদের আনুগত্য স্বীকার করা জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো তৎপর রয়ে গেছে।

মার্চের শুরুর দিকে কুর্দি নেতৃত্বাধীন এসডিএফ জোট আইএসের বিরুদ্ধে তাদের চূড়ান্ত আক্রমণ শুরু করেছিল। তখন পূর্ব সিরিয়ার বাঘুজ গ্রামে আইএসের অবশিষ্ট যোদ্ধারা অবস্থান নিয়ে ছিল।

কিন্তু অভিযান শুরু করার পর বোঝা যায় অনেক বেসামরিক লোক বাঘুজে রয়ে গেছেন। এতে আক্রমণের গতি মন্থর হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তাদের সরে যাওয়ার সুযোগ দিতে আক্রমণ বন্ধ করে এসডিএফ।

তখন বিদেশি নাগরিকসহ কয়েক হাজার নারী ও শিশু বাঘুজ ছেড়ে বের হয়ে আসে। এসডিএফ পরিচালিত উদ্বাস্তু শিবিরে আশ্রয় নেয় তারা। এ সময় আইএসের অনেক যোদ্ধাও বাঘুজ ত্যাগ করে।

কিন্তু যারা রয়ে যায় তারা তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তারা আত্মঘাতী হামলা ও গাড়ি বোমা হামলা চালিয়ে এসডিএফের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে। কিন্তু শেষ রক্ষা আর সম্ভব হয়নি।

বিজয়ের দিনে টুইটে বালি বলেছেন, “এই অনন্য দিনটিতে আমরা হাজারো শহীদদের স্মরণ করছি যাদের প্রচেষ্টায় এই বিজয় সম্ভব হয়েছে।”