রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩৮ মিনিটে বোয়িং কোম্পানির ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ উড়োজাহাজটি ১৪৯ জন যাত্রী ও আট জন ক্রু নিয়ে ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবা থেকে নাইরোবির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল।
কিন্তু মাত্র আট মিনিট পর ৮টা ৪৪ মিনিটে ফ্লাইট ৩০২ বিশফটু শহরের কাছে বিধ্বস্ত হয়।
সমস্যায় পড়েছেন জানিয়ে ফিরে আসার অনুমতি চেয়েছিলেন পাইলট, কিন্ত তখন অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিল।
যে কৃষিজমিতে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছিল সেখানকার ছয় প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স, তাদের সবাই উড়োজাহাজটির পেছনে দিয়ে প্রচুর ধোঁয়া বের হওয়ার কথা জানিয়েছেন, আর তাদের মধ্যে চার জন বিকট শব্দ হওয়ার কথা জানিয়েছেন।
দুর্ঘটনাস্থল থেকে ৩০০ মিটার দূরে বাস করেন গৃহবধু ও কৃষক ২৬ বছর বয়সী তুর্ন বুজুনা; তিনি বলেন, “বিকট ঘর্ঘর শব্দ হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল ধাতুতে ধাতুতে ঘষা ও ঝাঁকুনি লাগছিল। কোনো বিমান থেকে এ ধরনের শব্দ কোনোদিন শুনেনি বলে সবাই জানিয়েছে।”
“বিমানটি মাটির খুব কাছাকাছি চলে এসেছিল, তারপর একটি মোড় নেয়। মাঠে চড়া গরুগুলো আতঙ্কে দৌঁড়ানো শুরু করে,” বলেন তিনি।
ওই সময় মাঠ দিয়ে যাচ্ছিলেন ২৫ বছর বয়সী তামিরাত আবেরা। বিমানটি তীক্ষ্ণ একটি মোড় নিয়ে পেছনে সাদা ধোঁয়া ও কাপড় ও কাগজের মতো বিভিন্ন জিনিস ফেলতে ফেলতে প্রায় ৩০০ মিটার সামনে গিয়ে বিধ্বস্ত হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
“বিমানটি উপরে ওঠার চেষ্টা করেছিল কিন্তু নাকটি নিচে নেমে এসে পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গেই আগুন জ্বলে ওঠে ও সাদা ধোঁয়া বের হয়, পরে তা কালো ধোঁয়ায় পরিণত হয়,” বলেন তিনি।
বিধ্বস্ত হওয়ার পর উড়োজাহাজটি টুকরা টুকরা হয়ে যায়। সবচেয়ে বড় যে অংশটি অবশিষ্ট ছিল তা হল একটি চাকা ও থুবড়ে যাওয়া ইঞ্জিন। প্রায় দুইটি ফুটবল মাঠের সমপরিমাণ জায়গায় ধ্বংসাবশেষগুলো ছড়িয়ে ছিল।
সোমবার তদন্তকারীরা উড়োজাহাজটির দুটি ব্ল্যাক্স বক্স রেকর্ডার খুঁজে পেয়েছেন। এই রেকর্ডার দুটি উড়োজাহাজটির চূড়ান্ত মূহুর্তগুলো জানতে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা নিগুসু তেসেমা নিহতদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা পরিচয়পত্রগুলো সংগ্রহ করে পুলিশের হাতে তুলে দিতে সাহায্য করেছেন।
তিনি বলেছেন, “আমরা দুঃখিত, মর্মাহত।”