ভেনেজুয়েলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট কাটেনি, চলছে লুটপাটও

ভেনেজুয়েলায় টানা পঞ্চম দিনের মত বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে। সোমবার দেশজুড়ে স্কুল এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2019, 02:30 PM
Updated : 11 March 2019, 02:30 PM

বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি বিরোধী জোটের। অন্ধকারের মধ্যে দুর্বৃত্তদের লুটপাটের ঘটনাও ঘটছে। এ অবস্থায় রাজধানী কারাকাসের বাসিন্দারা বিবিসি’কে তাদের হতাশা বাড়তে থাকার কথা জানিয়েছেন।

ভেঙে পড়া অর্থনৈতিক কাঠামো এবং বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এমনিতেই দক্ষিণ আমেরিকার তেলসমৃদ্ধ দেশটি খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে। চলমান বিদ্যুৎ বিভ্রাট সেখানে ধ্বংস এবং হতাশা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।

সরকারপন্থি ‘মোটরসাইকেল গ্যাং’ অন্ধকার সড়ক গুলোতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। স্থানীয়দের কাছে তারা ‘কালেক্টিভস’ নামে পরিচিত।

বন্দুকের মুখে তারা সাধারণ জনগণকে তাদের আদেশ মানতে বাধ্য করছে। চারপাশে চরম হতাশজনক পরিস্থিতির মধ্যে কোথাও কোথাও লুটপাটের ঘটনা ঘটছে।

গত চারদিন ধরে ভেনেজুয়েলা জুড়ে চলা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে প্রকৃত অবস্থা কী ছিল বা অন্ধকারে কী ঘটছে তা অনুমান করা কঠিন।

এখনো দেশের অনেকাংশ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। তারা কী পরিস্থিতির মধ্যে আছে তার পূর্ণ চিত্র পাওয়াও শক্ত। আর যেসব জায়গায় বিদ্যুৎ আসছে সেখানেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আবারও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এ পরিস্থিতির কারণে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন, ব্যাংক, ক্রেডিট-কার্ড মেশিন, ইলেক্ট্রিক কুকার বা এয়ার কন্ডিশনার ছাড়া সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন অতিবাহিত করাই এখন ভীষণ দায় হয়ে পড়েছে।

সুপারমার্কেটগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খাবারের যোগান পেতে স্থানীয়দের হিমশিম খেতে হচ্ছে। কারাকাস উপকণ্ঠে একটি সুপারমার্কেটের বাইরে ক্ষোভে ফুসতে থাকা এক মা বলেন, “আমার দুই বছরের একটি ছেলে আছে। আর গতকাল থেকে আমার ঘরে কোনো খাবার নেই।”

তার বাড়ির কাছের একটি দোকান লুট হয়ে গেছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, তার এক প্রতিবেশী তাকে সামান্য ভাত দিয়েছে।

“আমি সেই ভাতে পানি ঢেলে সামান্য চিনি মিশিয়ে আমার ছেলেকে খাইয়েছি। কিন্তু আজ যখন সে আমার কাছে খাবার চাইবে, আমি তাকে কী দেব? প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ হিসেবে আমি ক্ষুধা সহ্য করতে পারি। আমার এক গ্লাস পানি হলেই হয়। কিন্তু একটি শিশু কী করবে?”

এই মা যখন কথা বলছিলেন ঠিক তার পেছনে একদল চরম হতাশ মা খাদ্য পণ্যের আশায় মরিয়া হয়ে বন্ধ সুপারমার্কেটের দরজায় আঘাত করছিলেন।

সুপারমার্কেটের ভেতরে ক্যাশ রেজিস্টার বা কার্ড মেশিন কাজ করছিল না। সুপারমার্কেটের কর্মীরা শুধুমাত্র মার্কিন ডলারের বিনিময়ে পণ্য দিচ্ছিলেন।

ক্ষুব্ধ মাজোরিয়ে বলেন, “আমরা দেশে মার্কিন ডলার ব্যবহার করি না। আমরা মার্কিন ডলারে বেতন পাই না। আমরা বলিভারে বেতন পাই।

“আমরা এই দোকান লুট করতে চাই না। আমরা সমস্যার কারণ হতে চাই না। আমরা খাবার চাই, আমরা ক্ষুধার্ত।”