পলাতক অবস্থায় তালেবান নেতা মোল্লা ওমর আফগানিস্তানে দুটি মার্কিন ঘাঁটির কাছাকাছি বসবাস করতেন বলে নতুন প্রকাশিত একটি বইয়ে দাবি করা হয়েছে।
Published : 11 Mar 2019, 02:47 PM
বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র মনে করলেও মোল্লা ওপর কখনও পাকিস্তানে গিয়ে লুকাননি বলে নিজের বই ‘দ্য সিক্রেট লাইফ অব মোল্লা ওমর’ এ লেখিকা বেটে ড্যাম দাবি করেছেন।
পলাতক অবস্থায় ওমর পাকিস্তানে নয়, বরং আফগানিস্তানে নিজ প্রদেশ জাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের একটি অগ্রবর্তী অপারেটিং ঘাঁটির মাত্র তিন মাইল দূরে বসবাস করতেন।
নেদারল্যান্ডের সাংবাদিক ড্যাম নিজের বইয়ের জন্য তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তালেবান সদস্যদের সাক্ষাৎকার নিতে ও গবেষণা করতে পাঁচ বছর ব্যয় করেছেন।
২০০১ সালে মার্কিন সামরিক অভিযানে তালেবান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পলাতক জীবন শুরু করেন মোল্লা ওমর। এ সময় সাফল্যের সঙ্গে মোল্লা ওমরের দেহরক্ষীর দায়িত্ব পালন করেন জব্বার ওমারি। ২০১৩ সালে অসুখে ভুগে তালেবান নেতার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাকে লুকিয়ে রেখেছিলেন ওমারি।
ড্যাম এই জব্বার ওমারির সাক্ষাৎকারও নিয়েছেন।
তালেবানের পতনের পরপরই একটি মার্কিন ঘাঁটির কাছে একটি বাড়ির কয়েকটি গোপন কক্ষে লুকিয়ে ছিলেন তাদের নেতা ওমর। ওই সময় ওমরের মাথার মূল্য এক কোটি মার্কিন ডলার ছিল। নিউ ইয়র্কের টুইন টাওয়ারে ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর এ মূল্য নির্ধারণ করেছিল মার্কিন প্রশাসন।
একবার এক ঘটনায় মার্কিন বাহিনী মোল্লা ওমর যে বাড়িটিতে লুকিয়ে ছিলেন সেখানে তল্লাশি চালিয়েছিল, কিন্তু তারা তার গোপন আস্তানা খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয় বলে বইটিতে বলা হয়েছে।
পরে মোল্লা ওমরকে আরেকটি বাড়িতে সরিয়ে নেওয়া হয়। সেখানে যে ভবনটিতে ওমর থাকতেন সেটি আরেকটি মার্কিন ঘাঁটির মাত্র তিন মাইলের মধ্যে ছিল। ওই ঘাঁটিটিতে এক হাজার মার্কিন সেনা ছিল।
ওমর বিবিসির পশতু ভাষার সার্ভিস থেকে খবর সংগ্রহ করতেন, সাক্ষাৎকারগুলো থেকে এমন তথ্যই পেয়েছেন ড্যাম।
নিজের গোপন আস্তানা থেকে তালেবান গোষ্ঠীকে পরিচালনা করতেন না ওমর, যদিও তালেবানরা তেমনটিই দাবি করতেন। তবে কাতারে তালেবানের একটি দপ্তর খোলার বিষয়টি তিনি অনুমোদন করেছিলেন বলে জানা গেছে, যে দপ্তরটিতে বসে মার্কিন ও তালেবান নেতারা আফগানিস্তানের দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়েছিলেন।
গত মাসে ডাচ ভাষায় ড্যামের বইটি প্রকাশিত হয়েছে। এটির ইংরেজি সংস্করণও শিগগিরই প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে।