বিজেতা মান্দাভগানের স্বামী স্কোয়াড্রন লিডার নিনাদ মান্দাভগানে ছিলেন রাশিয়ার তৈরি এমআই-১৭ হেলিকপ্টারের পাইলট। বুধবার বাদগামে একটি গ্রামের মাঠে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়ে ৩৩ বছর বয়সী এ সামরিক কর্মকর্তাসহ ৭ জন নিহত হন।
শুক্রবার পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় মহারাষ্ট্রের নাসিকে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। সেখানেই ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যোদ্ধাদের’ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানান বিজেতা। ঘৃণা উসকে না দিতেও অনুরোধ করেন তিনি।
“সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও টেলিভিশনে অনেক কিছু হয়। গণমাধ্যম কখনো কখনো দায়িত্বশীল আচরণ করে, কখনো করে না। আপনি স্লোগান দিতেই পারেন। তা না করে, যদি সত্যিই পরিবর্তন আনতে চান, নিনাদের জন্য, কিংবা উইং কমান্ডার অভিনন্দনের জন্য, বা শহীদদের জন্য, সামান্য কিছু করেন।
“হয় আপনি বাহিনীতে যোগ দেন, না হয় আপনার পরিবারের সদস্যদের যোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। যদি তা না পারেন, তাহলে আপনার আশপাশে এমন কোনো পরিবর্তন আনুন, যা দেশের উপকারে আসবে। আপনি আপনার চারপাশ পরিষ্কার রাখতে পারেন, রাস্তায় থুতু ফেলা বন্ধ করতে পারেন, জনসম্মুখে মূত্রত্যাগ না করতে পারেন, মেয়েদের হয়রানি বন্ধ করতে পারেন,” বলেন ভিজেতা।
নিহত স্কোয়াড্রন লিডারের এ স্ত্রী ‘যুদ্ধের বিরুদ্ধে’ স্পষ্টভাষায় তার অবস্থান তুলে ধরেন।
“আমরা যুদ্ধ চাই না। যুদ্ধের ক্ষতি সম্পর্কে আপনারা জানেন না। আমি চাই না আরও নিনাদ চলে যাক। সোশাল মিডিয়ারা যোদ্ধারা, দয়া করে থামুন। যদি আপনারা যুদ্ধে যেতে চান, তাহলে ময়দানে যান,” স্বামীর শেষকৃত্যে বিজেতার এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এনডিটিভি জানায়, শুক্রবার নিনাদের শেষকৃত্য শুরু হয় বিউগল বাজিয়ে; বিমানসেনাদের বাতাসে গুলি ছোড়ার সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে শোনা যায় ‘ভারত মাতা কি জয়’ ও ‘শহীদ নিনাদ অমর রহে’ স্লোগান।
নিনাদের দুই বছর বয়সী মেয়েটি যখন বাবার কফিনে চুমু খাচ্ছিল, বিজেতাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা তখন মেয়ের পাশে স্থানুর মত দাঁড়িয়েছিলেন।
নিহত স্কোয়াড্রন লিডারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও নাসিকে হাজির হয়েছিলেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
ভোনসালা সামরিক স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করে আওরঙ্গবাদের সার্ভিসেস প্রিপারেটরি ইনস্টিটিউট থেকে যন্ত্র প্রকৌশলে স্নাতক শেষ করেছিলেন নিনাদ। ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে তিনি ভারতীয় বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার উইংয়ে কমিশন পেয়েছিলেন।