ভিয়েতনামে পারমাণবিক ইস্যু নিয়ে ট্রাম্প-কিমের বৈঠক শুরু

পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে ভিয়েতনামে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা ‍কিম জং উনের মধ্যে শেষ দিনের চূড়ান্ত আলোচনা শুরু হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Feb 2019, 03:44 AM
Updated : 28 Feb 2019, 05:10 AM

বিবিসি জানিয়েছে, গত বছর সিঙ্গাপুরে এ দুনেতার প্রথম ঐতিহাসিক বৈঠকের পর থেকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে অল্পই অগ্রগতি হয়েছে, তাই এবারের বৈঠকে দৃঢ় কোনো পদক্ষেপের বিষয়ে দুই নেতার মধ্যে কোনো সমঝোতা হয় কি না তা দেখার অপেক্ষায় আছে পুরো বিশ্ব।

বৈঠক শুরুর আগে কিমকে পাশে নিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, “কোনো তাড়াহুড়া নেই। আমরা সঠিক চুক্তিটাই করতে চাইছি।”

আর কিম জানিয়েছেন, ‘ভালো ফলাফলে’ পৌঁছতে পারবেন বলে অনুভব করছেন তিনি।

কোরীয় উপদ্বীপ থেকে পারমাণবিক অস্ত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য একটি রোডম্যাপের বিষয়ে তারা আলোচনা করবেন, এমন প্রত্যাশা থাকলেও আলোচনার টেবিলে আরও অন্যান্য বিষয়ও থাকতে পারে, যেগুলোকে নিজেদের বিজয় বলে দাবি করতে পারে দুই পক্ষের যে কেউ।

হোয়াইট হাউসের তথ্যানুযায়ী, বৃহস্পতিবার ‍দু’নেতা হ্যানয়ের মেট্রোপোল হোটেলে ধারাবাহিক কয়েকটি বৈঠক করবেন যা শুরু হবে দুই নেতার মধ্যে ৪৫ মিনিটের একটি একান্ত বৈঠক দিয়ে। 

এসব বৈঠক শেষে একটি ‘যৌথ সমঝোতা স্বাক্ষর অনুষ্ঠান’ হবে এবং এরপর হ্যানয়ের স্থানীয় সময় ৩টা ৫০ মিনিটে ট্রাম্পের একটি সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে।

ওই যৌথ সমঝোতায় কী থাকতে পারে তা পরিষ্কার নয়। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কর্মকর্তা পর্যায়ে বিভিন্ন বৈঠক হয়েছে এবং যৌথ সমঝোতায় ওই বৈঠক থেকে অর্জিত বিভিন্ন বিষয় থাকতে পারে।

গত জুনে সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে প্রথম শীর্ষ বৈঠক হয়েছিল। এর আগে বেশ কয়েকমাস দু’নেতার মধ্যে উত্তপ্ত কথা চালাচালি হয়েছিল। তারপর তাদের ওই বৈঠকটি ছিল ঐতিহাসিক।

কোনো ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার কোনো নেতার সেটিই ছিল প্রথম বৈঠক। এখন সমালোচকদের জবাব দিতে তাদের বাস্তব কিছু অগ্রগতির নমুনা দেখাতে হবে এ বিষয় উভয় নেতাই সচেতন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

আগে ওয়াশিংটন বলতো, নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় পেতে হলে উত্তর কোরিয়াকে অবশ্যই বিনাশর্তে পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করতে হবে। কিন্তু ওই শর্তে উত্তর কোরিয়াকে টলানো যাবে না এটি জানাই ছিল।

হ্যানয়ে বৈঠকে মিলিত হওয়ার আগে পাশাপাশি বসে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন দুই নেতা।

এ সময় ট্রাম্প বলেছেন, কিমের প্রতি তার ‘অনেক শ্রদ্ধা’ রয়েছে এবং তাদের সম্পর্ক ‘খুব শক্তিশালী’। আলোচনা চলমান থাকলে উত্তর কোরিয়া ‘অর্থনৈতিক শক্তিকেন্দ্র’ হয়ে উঠতে পারে বলে ফের মন্তব্য করেন তিনি।

ট্রাম্পের পরের মন্তব্যে তাদের গত বৈঠকের সাফল্য ও অগ্রগতির ধারা নিয়ে সন্দেহের ইঙ্গিত পাওয়া গেল; তিনি বলেন, “প্রথম থেকেই আমি এটি বলে আসছি, গতি আমার কাছে কোনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না।”

এদিকে বিদেশি কোনো সাংবাদিকের প্রশ্নে তার প্রথম উত্তর বলে ধরে নেওয়া জবাবে কিম বলেন, “বলাটা আগাম হয়ে যায়, কিন্তু আমার স্বজ্ঞা থেকে অনুভব করছি ভাল ফলাফল হবে।”

বুধবার নৈশভোজে মিলিত হয়ে দুনেতার মধ্যে উষ্ণ কথাবার্তা হয়। কিমকে ‘মহান নেতা’ বলে সম্বোধন করেন ট্রাম্প, প্রতিউত্তরে ট্রাম্পকে ‘সাহসী নেতা’ অভিহিত করেন কিম।

ডিনারে দু’নেতা মার্কিন সারয়ন স্টেক ও পিয়ার কিমচি দিয়ে আহার সারেন। এ সময় কিমের সঙ্গে তার প্রধান উপদেষ্টা কিম ইয়ং চোল ও ট্রাম্পের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও উপস্থিত ছিলেন।