যুক্তরাষ্ট্রে রাশিয়ার পারমাণবিক ‘হামলাস্থলের তালিকা’ টিভিতে

পারমাণবিক হামলা চালালে মস্কো যুক্তরাষ্ট্রের কোন কোন সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানতে পারে তার একটি তালিকা সম্প্রচার করেছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Feb 2019, 09:18 AM
Updated : 26 Feb 2019, 09:33 AM

ক্রেমলিন যে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে তা ওইসব লক্ষ্যস্থলে ৫ মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে আঘাত হানতে পারবে বলেও দাবি তাদের।

রোববার সন্ধ্যায় রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সংবাদভিত্তিক ওই অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হয়।

মার্কিন লক্ষ্যস্থলের এ তালিকায় পেন্টাগন এবং মেরিল্যান্ডের ক্যাম্প ডেভিডে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অবকাশযাপন কেন্দ্রের নামও আছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্র চাইলে রাশিয়াও আরেকটি ‘কিউবান-স্টাইল মিসাইল ক্রাইসিসের’ জন্য প্রস্তুত, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এমন হুঁশিয়ারির একদিন পর দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে এ তালিকা প্রকাশ করা হল।

সাপ্তাহিক ‘ভেস্তি নেদেলি’ অনুষ্ঠানে উপস্থাপক দিমিত্রি কিসলেয়ভ যুক্তরাষ্ট্রের একটি মানচিত্র দেখিয়ে পারমাণবিক হামলার সময়ে কোন কোন স্থাপনা মস্কোর লক্ষ্যস্থলে থাকতে পারে তার তালিকা দেন।

এ তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ফোর্ট রিচি, ক্যালিফোর্নিয়ার বিমান ঘাঁটি ম্যাকক্লেলান ও ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের নৌ যোগাযোগ ঘাঁটি জিম ক্রিকও আছে।

ফোর্ট রিচি ও ম্যাকক্লেলানের স্থাপনা দুটি যুক্তরাষ্ট্র যথাক্রমে ১৯৯৮ ও ২০০২ সালে বন্ধ করে দেয় বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

অনুষ্ঠানের ক্রেমলিনঘনিষ্ঠ উপস্থাপক কিসেলেয়ভ বলেন, রাশিয়া যে ‘শেরকোন’ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে, সাবমেরিন থেকে ছোড়া হলে তা ৫ মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে এসব মার্কিন লক্ষ্যস্থলে আঘাত হানতে পারবে।

হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সাধারণত বায়ুমণ্ডল দিয়ে শব্দের চেয়েও ৫ গুণ গতিতে উড়ে যায়।

“এখন আমরা কাউকে হুমকি দিচ্ছি না। কিন্তু যদি এ ধরনের কিছু মোতায়েন হয়, তাহলে আমাদের প্রতিক্রিয়া হবে তাৎক্ষণিক,” বলেছেন কিসেলেয়ভ।

রাশিয়ার এ উপস্থাপকের মার্কিনবিরোধী অবস্থান নতুন নয়। রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে তেজস্ক্রিয় ছাইয়ে পরিণত করতে পারে বলে এর আগে এক মন্তব্যে বলেছিলেন তিনি।

কিসেলিয়ভের মন্তব্য নিয়ে জানতে চাইলে ক্রেমলিন বলেছে, তারা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিতে হস্তক্ষেপ করে না। 

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তিন দশক আগে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে স্বাক্ষরিত একটি ‘অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি’ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে আনার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়ছে।

স্নায়ুযুদ্ধের সময় স্বাক্ষরিত ওই চুক্তি অনুযায়ী, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে পারত না।

ট্রাম্প ওই চুক্তি থেকে সরে এসে ইউরোপে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বসাবেন বলে আশঙ্কা করছে মস্কো। তেমনটা হলে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের জলসীমার কাছে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ডুবোজাহাজ মোতায়েনে বাধ্য হবে বলে মন্তব্য করেছেন পুতিন।