ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফের আকস্মিক পদত্যাগ

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ২০১৫ সালের ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক চুক্তির ‘স্থপতি’ মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ পদত্যাগ করেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Feb 2019, 08:06 AM
Updated : 26 Feb 2019, 09:47 AM

সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক আকস্মিক ঘোষণায় পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন তিনি, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করা ইরানি এ কূটনীতিককে ২০১৫ সালে ছয় বিশ্ব শক্তির সঙ্গে তেহরানের স্বাক্ষরিত ‘পরমাণু চুক্তির’ মূল কারিগর মনে করা হয়।

“গত ৬৭ মাস ধরে ইরানের জনগণ ও এর বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ আমার প্রতি যে বদান্যতা দেখিয়েছেন, তার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। দায়িত্ব চালিয়ে যেতে অপারগতা এবং আমার সময়ে যেসব ভুলত্রুটি হয়েছিল, তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি,” নিজের ইনস্টাগ্রাম পেইজে লিখেছে তিনি।

পদত্যাগ সিদ্ধান্তের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ জানাননি তিনি।

সোমবার সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের তেহরান সফরকে কেন্দ্র করে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী দায়িত্ব ছেড়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া যায়নি এমন কিছু সূত্রের বরাত দিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

আসাদের ইরান সফরের আনুষ্ঠানিক কোনো ছবিতে জারিফ ছিলেন না। সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের  সফরের কথা ‘ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানতেন না’ বলেও দাবি করেছে একটি ওয়েবসাইট।  

রয়টার্স বলছে, তিন বছর আগে ছয় বিশ্ব শক্তির সঙ্গে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিনিময়ে পারমাণবিক কর্মসূচির লাগাম টানার যে চুক্তিতে ইরান স্বাক্ষর করেছিল তাতে জারিফই মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন।

গত বছরের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ওই চুক্তি থেকে সরে এসে তেহরানের অর্থনীতি ও তেলের ওপর আগের সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে। এরপর ইরানের ৫৯ বছর বয়সী এ পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশের ভেতরে কট্টরপন্থীদের তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন। 

২০১১ সালে সিরিয়ায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সোমবারই প্রথম আনুষ্ঠানিক তেহরান সফর করেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট। এবারের সফরে আসাদ ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি ও দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রে ইরানি মিশনের মুখপাত্র আলিরেজা মিরিইউসুফী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

প্রেসিডেন্ট রুহানি সেটি গ্রহণ করেছেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

জারিফের পদত্যাগ জাতীয় স্বার্থ রক্ষা না করে উল্টো বহুধাবিভক্ত মোল্লাতন্ত্রের কট্টরপন্থী অংশকে শক্তিশালী করবে শঙ্কায় ইরানের অনেক সাংসদ ও রাজনীতিবিদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পদত্যাগপত্রটি গ্রহণ না করতে প্রেসিডেন্টের প্রতি অনুরোধও জানিয়েছেন।