কয়েকমাসের বৈঠক এবং আলোচনার পর দেশটির মন্ত্রিসভার মন্ত্রীরা একটি প্রতিবেদনে হাতি শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা তোলার সুপারিশ করেছেন। সেইসঙ্গে হাতির মাংস প্রক্রিয়াজাত করে পোষা প্রাণীর জন্য খাবার তৈরিরও পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
বতসোয়ানায় হাতির মোট সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার বিচারে এ সংখ্যা অনেক বেশি বলেই মত অনেকের। তাছাড়া, বন্যপ্রাণীর সঙ্গে মানুষের সংঘাতও বাড়ছে। এর পেছনে আছে জলবায়ু পরিবর্তনসহ আরো নানা কারণ।
বৃষ্টি কমে আসার কারণে বনাঞ্চলে গাছগাছালি কমে যাওয়ায় হাতিরা তাদের বিচরণ ক্ষেত্র ছেড়ে বাইরের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। এতে হাতির দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষিজমির ফসল। অনেক সময় হাতির আক্রমণে মানুষের মৃত্যুর মত ঘটনাও ঘটছে।
২০১৮ সালের এপ্রিলে মকউইটসি মেসিসি বতসোয়ানার প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই মন্ত্রীদেরকে হাতি শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনপর্যালোচনা করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। যে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল ২০১৪ সালে তার পূর্বসূরির আমলে।
বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকটি পাবলিক মিটিং এবং বিভিন্ন সংগঠন, সম্প্রদায় ও ব্যক্তিগতভাবে বহু মানুষের মতামত নেওয়া হয়। এতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া এবং সীমিত আকারে নিয়মিত হাতি নিধনের পক্ষে মত এসেছে। এর ভিত্তিতেই মন্ত্রীরা তাদের প্রতিবেদন দেন।
প্রেসিডেন্ট মেসিসি এ প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে হাতি শিকারে নিষেধাজ্ঞা তোলার পদক্ষেপ বাস্তবায়নের আগে বিষয়টি নিয়ে আরো আলোচনা চলবে বলেই জানানো হয়েছে বিবিসি’র খবরে।
কারণ, হাতি শিকারের বিপক্ষেও মত দিচ্ছেন অনেকেই। তাদের ভাষ্য, হাতি শিকার নিষিদ্ধ হওয়ার পরই বতসোয়ানায় পর্যটন নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। এখন তা তুলে নেওয়া হলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বতসোয়ানার আন্তর্জাতিক সুনাম ক্ষুন্ন হবে। তাছাড়া, দেশের পর্যটনেও এর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
বতসোয়ানায় হীরার খনির আয়ের পর বিদেশি আয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস হচ্ছে পর্যটন।