যুক্তরাষ্ট্রকে চীনের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর আহ্বান

তার দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধ হওয়ার অধিকারকে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রদ্ধা জানানো উচিত বলে মন্তব্য করেছেন চীনের স্টেট কাউন্সিলর ওয়াং ই ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Feb 2019, 08:14 AM
Updated : 20 Feb 2019, 08:14 AM

দুই দেশের মধ্যে চলমান শুল্ক বিরোধ নিরসনে নতুন দফা আলোচনার শুরুতেই মঙ্গলবার বেইজিংয়ে সফররত মার্কিন প্রতিনিধিদলের উদ্দেশ্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

ওয়াং বহির্বিশ্বের জন্য চীনের দরজা আরও খুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও পুনর্ব্যক্ত করেছেন বলে খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

গত বছর থেকে বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতির দেশ একে অপরের কাছ থেকে আমদানি করা পণ্যে উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করে রেখেছে।

চীন প্রযুক্তি স্থানান্তরে বাধ্য করাসহ অন্যায্য বাণিজ্য চর্চা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের। চীন শুরু থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

নভেম্বরে শিল্পোন্নত দেশগুলোর এক সম্মেলন শেষে ওয়াশিংটন ও বেইজিং পাল্টাপাল্টি এ শুল্ক কার্যকর তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখে। বিরোধ নিষ্পত্তিতে কয়েক দফা বৈঠকও করেছে তারা।

মঙ্গলবার বেইজিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নেতাদের নিয়ে গঠিত প্রতিনিধিদলের উদ্দেশ্যে ওয়াং বলেন, একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহযোগিতাই দুই দেশের জন্য সঠিক বিকল্প হতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও তেমনটাই দেখতে চায়।

“যুক্তরাষ্ট্রের মতো চীনেরও অগ্রগতির অধিকার রয়েছে। চীনের জনগণেরও রয়েছে চমৎকার একটি জীবন পাওয়ার অধিকার। যুক্তরাষ্ট্রের মতোই চীনের অগ্রগতিও বিশ্বের স্বার্থে, এটিকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত মার্কিনিদের। চীনের উন্নয়ন যে যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও সুযোগ তৈরি করছে তা বুঝতে পারলেই বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সমস্যার মতো কিছু কিছু সমস্যার সমাধান সহজ হবে,” স্টেট কাউন্সিলর এমনটাই বলেছেন বলে বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ওয়াংয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া প্রতিনিধিদলে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা স্টিফেন হ্যাডলি, মার্কিন চেম্বার অব কমার্সের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইরন ব্রিলিয়ান্ট এবং চীনে মার্কিন চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট জেরেমি ওয়াটারম্যান ছিলেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

সরকারের দেওয়া আগের প্রতিশ্রুতিগুলো পুনর্ব্যক্ত করে ওয়াং বলেন, অগ্রগতির প্রয়োজন সাপেক্ষেই চীনের সংস্কার ও উদারনৈতিক পদক্ষেপের সমন্বয় করা হবে এবং বহির্বিশ্বের কাছে এর দরজা আরও খুলে দেওয়া হবে।

বাণিজ্যবিরোধ নিয়ে দুই পক্ষ কোনো চুক্তিতে না পৌঁছাতে পারলে আগামী ১ মার্চ থেকে ২০ হাজার কোটি ডলারের চীনা আমদানি পণ্যে মার্কিন শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৫ শতাংশ হয়ে যাবে।

মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা ভালোভাবেই এগুচ্ছে।

“এটা কোনো জাদুকরি তারিখ নয়,” পুরোপুরি মধ্যস্থতা হওয়ার আগ পর্যন্ত ১ মার্চের ‘ডেডলাইন’ পিছিয়ে দেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। 

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র পিপলস ডেইলি প্রকাশিত ট্যাবলয়েড গ্লোবাল টাইমসের বুধবারের সম্পাদকীয়তে চলতি সপ্তাহের বাণিজ্য আলোচনায় দুই পক্ষকেই শান্ত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ওয়াশিংটনকে বেইজিংয়ের ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে না দিতেও বলেছে তারা।