ভারতে আটকে গেল নাগরিকত্ব বিল, বিক্ষোভকারীদের জয় দাবি

ভারতে আটকে গেছে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিলটি ব্যর্থ হওয়ায় বিক্ষোভকারীরা জয় দাবি করেছে।

>>রয়টার্স
Published : 13 Feb 2019, 01:31 PM
Updated : 13 Feb 2019, 01:31 PM

নিম্নকক্ষ লোকসভায় গত মাসেই পাশ হয়েছিল নাগরিকত্ব বিল। লোকসভায় পাশের পরই নিয়মমাফিক তা পাঠানো হয়েছিল উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায়। কিন্তু নির্বাচনের আগে বুধবার পার্লামেন্টের শেষ অধিবেশনে বিলটি অনুমোদন পায়নি।

বিলের বিরোধীরা পার্লামেন্টে বিলটির এই আটকে যাওয়াকে স্বাগত জানিয়েছে। উত্তরপূর্বের মানুষের জন্য এ এক নৈতিক জয় বলে দাবি করেছে তারা।

আসাম রাজ্য সংগঠনের সদস্যরা বিলটি আটকে দেওয়ার জন্য রক্তবন্যা বইয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল।বিলটিকে ঘিরে উত্তরপূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সম্প্রতি বিক্ষোভও হয়েছে।

মঙ্গলবার সরকারপক্ষ থেকে বিলটি রাজ্যসভায় পেশ করার কথা ছিল।  কিন্তু বিরোধীদের হট্টগোলে এদিন রাজ্যসভার অধিবেশন সারা দিনের জন্য মুলতবি করা হয়।

এর আগে গত ৮ জানুয়ারিতে লোকসভায় পাস হয়েছিল পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে আসা অ-মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্বের প্রস্তাব সম্বলিত এই সংশোধনী বিল। সঙ্গে সঙ্গেই তা উত্তেজনা ছড়িয়েছিল উত্তর-পূর্ব ভারতে।

অমুসলিম শরণার্থীদের তালিকায় আছে হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, শিখ এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষরাও। বিলের আওতায় প্রতিবেশী দেশগুলোতে ধর্মীয় সহিংসতার শিকার হয়ে কেউ ভারতে থাকার আবেদন করলে নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ সুগম রাখা হয়েছে।

ভারত সরকার বিতর্কিত এ বিল লোকসভায় উত্থাপনের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই বিশেষ করে উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে বিক্ষোভ শুরু হয়।বিলটি লোকসভায় অনুমোদন পাওয়ার পর প্রতিবাদস্বরূপ আসামে বিজেপি’র মুখপাত্র মেহদি আলম বোরা পার্টি থেকে পদত্যাগ করেন।

আসামের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল বলছে, এ বিলের কারণে বাংলাদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ আসামসহ গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতে আশ্রয় পাবে। অর্থাৎ, ১৯৮৫ সালের আসাম অ্যাকর্ড লঙ্ঘন করে বাংলাদেশ থেকে ১৯৭১ সালের মার্চের পর ভারতে গেলেও নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ পাবে অবৈধ হিন্দু শরণার্থীরা ।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে অবৈধ শরণার্থীদের নিয়ে স্থানীয়দের জোরাল আপত্তি আছে। তারা শরণার্থীদের বের করে দিতে চায়। আসামে বিভিন্ন জনগোষ্ঠী বহিরাগতদের নিজস্ব এলাকায় আশ্রয় দিতে বরাবরই প্রকাশ্যে বিরোধিতা করছে।