‘সন্তানসম’ ওই বনসাইগুলোর যত্ন নিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চোরদের প্রতি আবেগঘন অনুরোধও করেছেন সেইজি ইমুরা ও তার স্ত্রী ফুয়ুমি ইমুরা।
টোকিওর সাইতামায় এ জাপানি দম্পতির নিজেদের বাগান থেকে দুর্লভ বনসাইগুলো চুরি যায় বলে জানিয়েছে বিবিসি।
“কেমন লাগছে তা ভাষায় ব্যক্ত করতে পারবো না আমরা। আমাদের অমূল্য ধন ছিল তারা,” লিখেছেন সেইজি ইমুরা।
চুরি যাওয়া বনসাইগুলোর বাজারমূল্য ১ লাখ ১৮ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি হবে বলে জানিয়েছে সিএনএন।
পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশ, বিশেষ করে জাপানে শিল্পিত উপায়ে বিভিন্ন বৃক্ষ ও উদ্ভিদকে বছরের পর বছর বনসাই বানিয়ে রাখার চল আছে। কেবল বানালেই চলে না, নির্ধারিত বাক্সে এসব বনসাই রেখে বিশেষ যত্ন নিতে হয়।
বনসাই সংগ্রাহক ও অনুরাগীদের কাছে বহুল আকাঙ্ক্ষিত শিম্পাকু জুনিপার বনসাইয়ের কোনো কোনোটির দাম ৯১ হাজার ডলারেরও বেশি হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি। এ বনসাইগুলো সাধারণত কয়েকশ’ বছর বেঁচে থাকে।
“আমাদের শিম্পাকুটি ৪০০ বছর ধরে বেঁচে আছে, এর যত্নের দরকার হয়। পানি ছাড়া এটি এক সপ্তাহও টিকতে পারবে না। এটি অনেকদিন থাকতে পারবে, এমনকী আমরা চলে যাওয়ার পরও। যারাই এটি নিয়েছেন, আমি চাই তারা যেন এ শিম্পাকুকে ঠিকমতো পানি দেন,” ২৪ জানুয়ারি ফেইসবুকে দেওয়া পোস্টে এমনটাই লিখেছেন ফুয়ুমি।
চুরি যাওয়ার তিন সপ্তাহ পরও বনসাইগুলোর খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন এ নারী।
“আমরা দুঃখিত, নিজেদের দুর্ভাগা মনে হচ্ছে। এরপরও আমরা আমাদের অন্যান্য বনসাইগুলোর সুরক্ষায় ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাবো। আকর্ষণীয় গাছের বনসাইকরণও অব্যাহত রাখবো,” লিখেছেন তিনি।
বিভিন্ন বাগানমালিক ও বনসাই সংগ্রাহকরা সেইজি ও ফুয়ুমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন । সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা তাদের সহানুভূতি দেখাচ্ছেন, জানাচ্ছেন সংহতি।
“ক্ষমার অযোগ্য। বনসাই চুরির অর্থ কি হতে পারে, তা ওই চোরেরা জানে না। এ ৭টিকে ছেড়ে দাও। চুরির সঙ্গে সঙ্গে এ বনসাইগুলোতে জড়ানো ভালোবাসাও চলে গেছে,” ফেইসবুকে লিখেছেন এক ব্যবহারকারী।
“বনসাই হচ্ছে সম্মান ও উদযাপনের বিষয়, এটিকে অবশ্যই মানুষের লোভ-লালসা থেকে দূরে রাখা উচিত। খবরটা পড়ে আমার হৃদয় ভেঙে গেছে,” মন্তব্য আরেকজনের।