কাতালুনিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সরকার আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা করাতেই দলগুলো এ বিক্ষোভ করছে। মধ্য-ডানপন্থি দল পপুলার পার্টি (পিপি) এবং সিটিজেনস পার্টির অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের এ পরিকল্পনা দেশদ্রোহের সামিল।
দীর্ঘদিন ধরে কাতালান সরকার এবং জনগণ স্পেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে চাইছে। স্পেনের উত্তর-পূর্বের সমৃদ্ধ অঞ্চল কাতালুনিয়ার স্বাধীনতার প্রশ্নে ২০১৭ সালের ১ অক্টোবরের গণভোট অনুষ্ঠিত হয় এবং জনসমর্থন স্বাধীনতার পক্ষে যায়।
যার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন কাতালান প্রেসিডেন্ট কার্লোস পুজদেমন সরকার একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণা করে গ্রেপ্তার এড়াতে বেলজিয়াম পালিয়ে যান। স্বাধীনতা ঘোষণার পর স্পেন সরকার কাতালান পার্লামেন্ট বিলুপ্ত ঘোষণা করে ক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেয় এবং আগাম নির্বাচন ঘোষণা করে।
ওই বছর ডিসেম্বরের আগাম নির্বাচনে বিচ্ছিন্নতাবাদীরাই পুনরায় জয়লাভ করে সরকার গঠন করে। তবে পুজদেমনের আর দেশে ফেরা হয়নি। স্পেন সরকার তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করায় কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও তিনি দেশে ফিরতে ব্যর্থ হন।
ডানপন্থি দলগুলো ওই প্রস্তাবকে ‘প্রতারণা’ এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছে ‘আত্মসমর্পণ’ বলে বিবেচনা করছে। তারা কোনোভাবেই কাতালুনিয়ার স্বাধীনতা চায় না। যদিও স্পেন সরকারেও স্বাধীনতার বিপক্ষে।
অন্যদিকে, কাতালুনিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদী সরকার স্বাধীনতাই চায়, কোনো আলোচনা নয়। তাই তারা কেন্দ্র সরকারের আলোচনার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে।
মধ্য-ডানপন্থি দল পপুলার পার্টি (পিপি) ও সিটিজেনস পার্টির ডাকে শনিবারের ওই বিক্ষোভ সমাবেশে ‘দ্য ভক্স’ পার্টির মত কট্টর-ডানপন্থি দলগুলোও অংশ নিয়েছে বলে জানায় বিবিসি।
তারা ‘স্পেনের ঐক্যের জন্য এখনই নির্বাচন চাই’ বলে স্লোগান দিয়েছে। রাজধানী মাদ্রিদের ‘কোলন স্কয়ার’ এবং আশেপাশের সড়কগুলোকে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ জড় হয়ে এদিন বিক্ষোভ করে বলে জানায় পুলিশ।
তারা ‘স্পেন দীর্ঘজীবি হোক’ বলে স্লোগান দিয়ে গান বাজিয়ে মিছিল করে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে।
মাবেল ক্যাম্পুজানো নামে এক বিক্ষোভকারী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “সানচেজ স্পেনের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। আমার মনে হয় স্পেনের জনগণের তার মত সরকার প্রধান প্রাপ্য নয়।”