ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই মেরু ভালুকগুলো দেশটির আর্কটিক অঞ্চলভুক্ত দ্বীপপুঞ্জ নোভায়া জিমলিয়ার বাড়িঘরে ও সরকারি দপ্তর ভবনগুলোতে উৎপাত শুরু করায় শনিবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জরুরি অবস্থা জারি করেছে।
এক বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষ বলেছে, “মেরু ভালুকরা জনবসতি এলাকায় ব্যাপক উৎপাত চালাচ্ছে।”
এ উৎপাত সামাল দেওয়ার জন্য প্রায় তিন হাজার বাসিন্দার দ্বীপপুঞ্জটির কর্তৃপক্ষ সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ ভালুকদের গুলি করার অনুমতি দেয়নি। পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য তারা নোভায়া জিমলিয়ায় একটি কমিশন পাঠাবে। তবে পর্যালোচনার পর নির্বাচিত ভালুকদের গুলি করার বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছে।
বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে আর্কটিক অঞ্চলের বরফ দ্রুত গলতে থাকায় মেরু ভালুকরা স্থলে বেশি সময় কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। এখানে খাবারের জন্য নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করতে হচ্ছে তাদের।
তাদের বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে ঘোষণা করে শিকার নিষিদ্ধ করেছে রাশিয়া।
আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষগুলোর কাছে পাঠানো এক প্রতিবেদনে নোভায়া জিমলিয়ার স্থানীয় প্রশাসনের উপপ্রধান কর্মকর্তা আলেকজান্দার মিনায়েভ জানিয়েছেন, ডিসেম্বর থেকে ৫২টি মেরু ভালুক দ্বীপপুঞ্জের প্রধান জনবসতি মেলুশিয়া গুবায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করছে, এদের মধ্যে কিছু ভালুক ‘আক্রমণাত্মক আচরণ’ দেখিয়েছে।
এসব আচরণের মধ্যে ‘লোকজনকে আক্রমণ, মানুষের বাড়িতে ও সরকারি ভবনগুলোতে প্রবেশের’ মতো ঘটনা আছে বলে জানিয়েছেন মিনায়েভ।
“ছয় থেকে ১০টি ভালুক সবসময় জনবসতির ভিতরেই থেকে যাচ্ছে। লোকজন আতঙ্কে আছে, বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে। বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের স্কুল ও কিন্ডারগার্টেনে পাঠানোর বিষয়েও শঙ্কিত হয়ে আছে,” বলেছেন তিনি।
মেরু ভালুকের সংখ্যা নজিরবিহীন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনের প্রধান কর্মকর্তা জিগানশা মুসিন।
“আমি ১৯৮৩ থেকে নোভায়া জিমলিয়াতে আছি, কখনো এতো মেরু ভালুকের আনাগোনা দেখিনি,” আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো আবেদনে বলেছেন তিনি।
নোভায়া জিমলিয়ায় রাশিয়ার একটি বিমান ও সেনা ঘাঁটি আছে।
মেরু ভালুকরা আড্ডা গাড়ায় নোভায়া জিমলিয়ায় সামরিক বাহিনীর অব্যবহৃত কয়েকশ ভবন ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে বলে জানুয়ারিতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন।