ভেনেজুয়েলার সেনাবাহিনীর সঙ্গে ‘সরাসরি যোগাযোগ’, পক্ষত্যাগে আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের

ভেনেজুয়েলার সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করেছেন হোয়াইট হাউসের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2019, 08:23 AM
Updated : 9 Feb 2019, 08:23 AM

মার্কিন প্রশাসন শিগগিরই ভেনেজুয়েলার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ বাড়ানোর প্রস্তৃতি নিচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

যোগাযোগ হওয়া মাদুরোপন্থী সেনা কর্মকর্তাদের পক্ষ ত্যাগ করে ওয়াশিংটন বিরোধীদলীয় নেতা হুয়ান গুইদোকে ‘ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ারও আহ্বান জানিয়েছে, হোয়াইট হাউসের ওই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এমনটিই জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্রের এ আহ্বান আদতে কতটুকু কাজে আসবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন পর্যবেক্ষকরা। সরকার ও বিরোধীদের মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যে ভেনেজুয়েলার সেনাবাহিনীর প্রায় ২ হাজার জেনারেলের মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র একজন জেনারেল গুইদোশিবিরে নাম লিখিয়েছেন।

“আমাদের বিশ্বাস বড় বড় পাথরই পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়বে, এ জন্যই কিছু নুড়ি সরেছে। আমরা এখনো সাবেক হয়ে যাওয়া মাদুরো শাসনব্যবস্থার সদস্য, সেনা সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছি। যদিও এই কথোপকথন হয়েছে একেবারেই সীমিত পর্যায়ে,” বলেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হোয়াইট হাউসের ওই উর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

ভেনেজুয়েলার সেনাবাহিনীর কী পর্যায়ের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে, মার্কিন এ কর্মকর্তা সে বিষয়ে কিছু বলেননি। যাদের সঙ্গে কথা হয়েছে, তারা পক্ষ ত্যাগ করলে মাদুরোর পতন ঘটবে কী না, এমন প্রশ্নেরও জবাব দেননি তিনি।

জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে লাতিন আমেরিকার তেলসমৃদ্ধ দেশটিতে শুরু হওয়ার রাজনৈতিক দোলাচলে সেনাবাহিনীকে প্রেসিডেন্টের সঙ্গ ত্যাগে বারবারই আহ্বান জানিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মাদুরোর সঙ্গ ছাড়লে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে বলে লোভও দেখিয়েছে তারা। অবশ্য এত কিছুর পরও বড় ধরনের সফলতা আদায় করতে পারেনি ট্রাম্প প্রশাসন; মাদুরোর সঙ্গে সেনাবাহিনীর গাঁটছড়া এখনো ‘অটুটই’ দেখা যাচ্ছে, বলছেন পর্যবেক্ষকরা।

যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি লাতিন আমেরিকা এবং ইউরোপের অনেক দেশও গুইদোকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

তবে ওয়াশিংটন চাইলেও শীর্ষ ইউরোপীয় দেশগুলো এখনো কারাকাসের তেল বা গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাতগুলোর ওপর কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি।

যুক্তরাষ্ট্র এখন মাদুরোকে ক্ষমতায় রাখতে ভূমিকা রাখা কিউবান সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার কথা ভাবছে বলে রয়টার্সকে ট্রাম্প প্রশাসনের অন্য এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।   

এদিকে বিরোধীদলীয় নেতা গুইদো যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় ভেনেজুয়েলায় ‘অভ্যুত্থান ঘটানোর’ চেষ্টা করছেন জানিয়ে মাদুরো, যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের যুদ্ধ বাধানোর ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন।

জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে ভেনেজুয়েলার এ প্রেসিডেন্টকে নিয়মিতই সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ঘাঁটি সফর করতেও দেখা যাচ্ছে। চলতি সপ্তাহেই দেশটিতে বড় ধরনের সামরিক মহড়া হওয়ারও কথা রয়েছে।

বেশিরভাগ পশ্চিমা দেশ বিপক্ষে থাকলেও রাশিয়া, চীন, কিউবা, তুরস্ক, ইরান, সিরিয়া, নিকারাগুয়া ও বলিভিয়া মাদুরোর প্রতি তাদের সমর্থনের কথা প্রকাশ্যে জানিয়েছে।

ফ্রান্স, স্পেন, অস্ট্রিয়ার মতো ইউরোপীয় দেশগুলো গুইদোকে স্বীকৃতি দিলেও ইতালি এবং স্লোভাকিয়া ওই পথে হাঁটতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।