থাইল্যান্ডের রাজকুমারী প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী

প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে ব্যতিক্রমী নজির সৃষ্টি করেছেন থাইল্যান্ডের রাজার বোন রাজকুমারী উবোরাতানা রাজকন্যা সিরিভাধানা বার্ণাভাদি।

>>রয়টার্স
Published : 8 Feb 2019, 07:46 AM
Updated : 8 Feb 2019, 07:55 AM

৬৭ বছরের রাজকুমারী বর্তমান রাজা মাহা ভাজিরালংকর্নের বড় বোন এবং প্রয়াত রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদেজের প্রথম সন্তান।

নির্বাসিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার দলের একজন প্রার্থী হিসেবে রাজকুমারী উবোরাতানা মনোনয়নপত্র জামা দিয়েছেন।

থাইল্যান্ডের সামরিক জান্তা নেতা প্রায়ুথ চান-ওচা তার অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হতে যাচ্ছেন। শুক্রবার প্রায়ুথ ‘পালাং প্রচারাত পার্টি’র প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ে নামার ঘোষণা দিয়েছেন।

এক বিবৃতিতে প্রায়ুথ বলেন, “আমি আমার ক্ষমতায় থাকার মেয়াদ বাড়াতে নয় বরং দেশ ও জনগণের লাভের জন্য নির্বাচন করছি।”

২০১৪ সালের মে মাসে সেনা অভ্যূত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন প্রায়ুথ।

থাইল্যান্ডে ১৯৩২ সাল থেকে সাংবিধানিক সরকার ব্যবস্থা চালু হলেও জনগণের কাছে রাজপরিবার অত্যন্ত সম্মানিত এবং এখনো বেশ প্রভাবশালী। বিশেষ করে কোনো রাজনৈতিক সংকট সামাধান রাজা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

যদিও দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য অনুযায়ী থাই রাজপরিবার রাজনীতির বাইরেই থাকে।

অতীতের নজির ভেঙ্গে রাজনীতিতে আসা রাজকুমারী উবোরাতানা দেশটির বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক পরিবেশের ‘উন্নতি ঘটানো’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

আগামী ২৪ মার্চ থাইল্যান্ডে জাতীয় নির্বাচন।

নির্বাচনে সিনাওয়াত্রার দল ‘পুয়ে থাই পার্টি’ ও তাদের মিত্রদের সঙ্গে সেনাবাহিনী সমর্থিত ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর পিচ অ্যান্ড অর্ডার (এনসিপিও) মধ্যে মূল লড়াই হবে।

রাজকুমারী উবোরাতানা থাকসিন অনুসারীদের দল ‘থাই রক্ষা চার্ট পার্টি’র একমাত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশনে দলের প্রাধানমন্ত্রী প্রার্থীর নাম নিবন্ধনের পর ‘থাই রক্ষা চার্ট পার্টির’ নেতা প্রিচাপোল পোংপানিছ সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের দল রাজকুমারীকে একমাত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে।

“তিনি অনেক জ্ঞানী এবং অধিকতর যোগ্য ব্যক্তি। আমার বিশ্বাস, তাকে মনোনয়ন দেওয়া নিয়ে কোনো আইনী জটিলতার সৃষ্টি হবে না। আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে তার প্রার্থীরা চূড়ান্ত করার অপেক্ষায় আছি।”

আগামী শুক্রবারের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে চূড়ান্ত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে।

রাজকুমারী উবোরাতানা ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি থেকে গণিত ও জৈব-রয়াসনে স্নাতক ডিগ্রি গ্রহণের পর ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া থেকে গণস্বাস্থ্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন।

১৯৭২ সালে সহপাঠী আমেরিকার পিটার জেনসেনকে বিয়ে করতে নিজের রাজকীয় মর্যাদা বিজর্সন দেন তিনি।

১৯৯৮ সালে বিবাহ বিচ্ছেদের আগে ২৬ বছর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেছেন।

রাজকুমারী উবোরাতানা ২০০১ সালে থাইল্যান্ডে ফিরে রাজ দায়িত্ব পালন করা শুরু করেন; যদিও তিনি আর কখনো পূর্ণ রাজকীয় মর্যাদা ফিরে পাননি।

তরুণদের মাদক থেকে দূরে রাখতে তার আন্দোলন ‘টু বি নম্বার ওয়ান’ এর জন্যও তিনি ব্যাপক সমাদৃত।