বিপজ্জনক, ক্ষতিকর কয়েক ধরনের ভিডিও নিষিদ্ধ করেছে ইউটিউব

বিপজ্জনক কিংবা মানসিকভাবে পীড়াদায়ক কয়েক ধরনের ‘প্র্যাঙ্ক’ বা কৌতুককর ভিডিও ক্লিপ নিষিদ্ধ করেছে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2019, 09:58 AM
Updated : 16 Jan 2019, 12:31 PM

ভিডিও শেয়ারিং এর মাধ্যমে সম্প্রতি ‘চ্যালেঞ্জ’ জয়ের নামে বিপজ্জনক নানা কাজের প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় হতাহতের ঘটনা পর্যন্ত ঘটছে।

তথাকথিত এসব ‘চ্যালেঞ্জের’ ভিডিও দেখে অনেকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে, আবার অনেকে ঝুঁকিপূর্ণ চ্যালেঞ্জ নিতেও উৎসাহী হচ্ছে। এ কারণেই ইউটিউব এবার ঘোষণা দিয়ে এসব কন্টেন্ট নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গত বছরের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটার ২০ বছর বয়সী তরুণী মোনালিসা পেরেজ তার প্রেমিক মারিও রুইজকে গুলি করার দৃশ্য ভিডিও করে, পরে ইউটিউবে তা ভাইরাল হয়।

গুলির মুখে একটি বিশ্বকোষ রুইজকে সুরক্ষা দেবে বলে ওই যুগল বিপজ্জনক ওই ভিডিওতে আশাবাদ ব্যক্ত করলেও তা হয়নি। গুলিতে রুইজের মৃত্যুর ঘটনায় মোনালিসার ৬ মাসের জেল হয়েছিল।

গত বছর ইন্টারনেটের এক ‘চ্যালেঞ্জে’ অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে কাপড় ধোয়ার ডিটারজেন্ট পড খেয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে ডিটারজেন্ট পডের প্রস্তুতকারক প্রক্টর অ্যান্ড গেম্বলকে মার্কিন ফুটবল তারকা রব গ্রনকোওস্কিকে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে একটি সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনও শুরু করতে হয়েছিল।

সাম্প্রতিক সময়ে নেটফ্লিক্সের বার্ডবক্স নামের একটি শো নিয়েও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নতুন ‘চ্যালেঞ্জের’ আবির্ভাব ঘটেছে, যাতে চোখ বেঁধে ড্রাইভিংসহ বিভিন্ন কাজে উৎসাহিত করা হচ্ছে। ওই চ্যালেঞ্জে অংশ নিয়ে চোখ বেঁধে গাড়ি চালাতে গিয়ে অন্তত একজন দুর্ঘটনায়ও পড়েছেন।

এ ধরনের উপাদানের ‘স্থান নেই ইউটিউবে’, গুগল মালিকানাধীন জনপ্রিয় এ প্ল্যাটফর্মটি এমনটাই বলেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বিপজ্জনক বা মানসিকভাবে পীড়াদায়ক কনটেন্টকে নিষিদ্ধ করার কথা বললেও ঝুঁকিপূর্ণ কন্টেন্ট বিষয়ে ইউটিউব এখন পর্যন্ত তার বিদ্যমান নিয়ম বাস্তবায়নেই অনেকটাই ব্যর্থ হয়েছে।

এ ভিডিও শেয়ারিং মাধ্যম গত বছরের এপ্রিলে তাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে এ ধরনের কনটেন্ট সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। সম্প্রতি প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম বাজফিডের এক প্রতিবেদনে ইউটিউবে যে এখনো রগরগে ও পাশবিক বিভিন্ন কনটেন্ট রয়ে গেছে তার বিস্তারিত জানানো হয়েছে।

এসবের মধ্যে কিছু কিছু ভিডিও কয়েক কোটি বার দেখা হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।

ইউটিউব বলেছে, “নিপীড়নকে উৎসাহিত করে এমন বিষয়বস্তু সরিয়ে নেওয়ার হালনাগাদ নীতি বাস্তবায়ন করতে একাগ্রভাবে কাজ করছি আমরা।”

কিন্তু প্র্যাঙ্ক ভিডিও নিয়ে নতুন নীতি বাস্তবায়নে ইউটিউব আরও জটিলতায় পড়বে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের। কোন কনটেন্টটি ‘ক্ষতিকারক’, কোনটি নয়, তা চিহ্নিত করা সহজ হবে না বলেও মন্তব্য তাদের।