রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে এ কথা বলার আগে গুজমানের ওই সাবেক সহযোগী মার্কিন কর্তৃপক্ষকেও এমন তথ্য দিয়েছিলেন।
আলেক্স ফিফুয়েন্তেস নামের ওই ব্যক্তি নিজেকে ‘এল চাপোর’ এক সময়ের ‘ডান-হাত’ বলে বর্ণনা করেছেন।
‘গুজমান এই ঘুষ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন’, মার্কিন কর্তৃপক্ষকে ২০১৬ সালে তিনি এমন কথা বলেছিলেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ফিফুয়েন্তেস বলেন, “তা ঠিক”।
সাক্ষ্যে ফিফুয়েন্তেস জানান, পেইনা নিয়েতো প্রথমে গুজমানের কাছে ২৫ কোটি ডলার চেয়ে পাঠিয়েছিলেন এমন কথা তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষগুলোকে বলেছিলেন।
কৌঁসুলিদের তিনি জানান, ২০১২ সালের অক্টোবরে পেইনা নিয়েতোকে ঘুষের অর্থগুলো দেওয়া হয়েছিল, যে বছর তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
সাক্ষ্যে ফিফুয়েন্তেস আরও জানান, পেইনা নিয়েতোর কাছ থেকে একটি বার্তা পেয়েছেন এবং তিনি আর পালিয়ে থাকতে পারবেনা না বলে বার্তায় জানানো হয়েছে বলেও একসময় গুজমান তাকে জানিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে পেইনা নিয়েতো বা তার সাবেক মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি, তবে এর আগে পেইনা নিয়েতো ঘুষের অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
ওই সময় পেইনা নিয়েতো এ অভিযোগটিকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা ও মানহানিকর’ বলে দাবি করেছিলেন।
এ অভিযোগটি গুজমানের বিচার চলাকালে উঠে আসা সবচেয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ। নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ বিচারে এর আগে নিচুস্তরের দুর্নীতি বিষয়ক বিভিন্ন অভিযোগের সাক্ষ্য পাওয়া গিয়েছিল।
পেইনা নিয়েতো ২০১২ সালের ডিসেম্বরে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ২০১৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। এর আগে তিনি মেক্সিকোর সবেচেয়ে জনবহুল রাজ্যের গভর্নর ছিলেন। এক সময় রাজনীতির এই উদীয়মান তারকা দুর্নীতির কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে মিয়ম্রানভাবে ক্ষমতা থেকে বিদায় নেন।
মেক্সিকোর কুখ্যাত মাদক অপরাধী গুজমানকে ফেব্রুয়ারি ২০১৪-তে আটক করেছিল পেইনা নিয়েতো সরকার। কিন্তু প্রায় ১৭ মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো জেল ভেঙে পালান তিনি। এ সময় নিজের কারাকক্ষের ঠিক নিচে খুঁড়ে তৈরি করা এক মাইল লম্বা একটি সুড়ঙ্গ দিয়ে তিনি পালিয়ে যান।
পরে ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে মেক্সিকোর উত্তরপশ্চিমাঞ্চল থেকে তাকে ফের গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ২০১৭ সালে ৬১ বছর বয়সী এই অপরাধীকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে সিনালোয়া অপরাধী চক্রের প্রধান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে কোকেন, হেরোইন ও অন্যান্য মাদক পাচারের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে তাকে।