মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে মে’র খসড়া ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ভোটাভুটি হবে।
ভোটে চুক্তিটি পাস না হলে ‘পার্লামেন্টে অচলাবস্থা সৃষ্টি হবে’ বলে সতর্ক করে মে আরো বলেন, যদি যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) না ছাড়ে তবে রাজনীতির উপর জনগণের আস্থা ‘মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হবে।
উত্তর আয়ারল্যান্ডের ওপর মে’র ব্রেক্সিট চুক্তির প্রভাবের বিষয়টি নিয়েই মূলত সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। যদিও এ বিষয়টি নিয়ে যারা সংশয়ে আছেন তাদেরকে আশ্বস্ত করেছে ইইউ। আর প্রধানমন্ত্রী মে’ও এর ভিত্তিতেই এমপি’দেরকে শঙ্কামুক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
উত্তর আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্যের অন্তর্গত। আর ‘রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড’ আলাদা একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে উত্তর আয়ারল্যান্ড নিয়ে৷ ব্রেক্সিটের পর উত্তরের সঙ্গে আইরিশ প্রজাতন্ত্রের স্থল সীমান্তে কোনোরকম বিঘ্নের ক্ষেত্রে শান্তি বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে৷ ইইউ এমন পরিস্থিতি চায় না৷
অন্যদিকে, উত্তর আয়ারল্যান্ডকে ইইউ বাজারভুক্ত রেখে তাদের সঙ্গে ব্রিটেনের মূল ভূখণ্ডের মধ্যে সীমান্তের ঘোর বিরোধী যুক্তরাজ্য৷ সীমান্তে ‘ব্যাকস্টপ' নিয়ে অনেকেই শঙ্কিত৷ তাদের আশঙ্কা, এ ব্যবস্থা শেষ পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে যাবে এবং অন্য দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে৷
মে বিরোধীরা তাই এ বিষয়টি নিয়ে প্রবল আপত্তি তুলেছে। তাদের যুক্তি, এটি যুক্তরাজ্যের জন্য একটি ‘ফাঁদ’। তবে ইইউ থেকে মে কে পাঠানো এক চিঠিতে বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কার কোনো কারণ নেই বলে জানানো হয়েছে। ওদিকে, ইইউ’র চিঠিকে স্বাগত জানিয়ে মেও বলেছেন, “তারা ব্যাকস্টপ নিয়ে তাদের অবস্থান খুব পরিষ্কার ভাবে ব্যাখ্যা করেছে। ফলে এটি কোনো ফাঁদ নয়।”
তবে মে যাই বলুন, তার ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে নিজ দল কনজারভেটিভ পার্টির অনেক নেতাই সন্তুষ্ট নন। এর প্রমাণ একের পর এক মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের পদত্যাগ। তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন সহকারী হুইপ গ্যারেথ জনসন। চুক্তি নিয়ে অসন্তোষের জেরে সোমবার তিনি পদত্যাগ করেন।
প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো পদত্যাগপত্রে তিনি লেখেন, এটি ‘আমাদের জাতীয় স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর’। তিনি আরো বলেন, “সরকারের প্রতি নয় বরং সবার আগে দেশের প্রতি আমার আনুগত্য প্রকাশের সময় এসেছে।”
বিবিসি জানায়, লেবার পার্টিসহ সব বিরোধীদলগুলো মে’র ব্রেক্সিট চুক্তির বিপক্ষে ভোট দেওয়ার কথা জানিয়েছে। এমনকি শতাধিক কনজারভেটিভ এমপি এবং ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টির ১০ জন এমপিও বিপক্ষে ভোট দিতে পারেন।
মে বলেছেন, “ওয়েস্টমিনস্টারে কেউ কেউ আছেন যারা ব্রেক্সিট পিছিয়ে দেওয়া এমনকি এটি বন্ধ করতেও ইচ্ছুক। এটা করতে তারা যা কিছু করা সম্ভব করবে।”
তিনি বলেন, “কোনো চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হবে। গত সাত দিন ধরে ওয়েস্টমিনস্টারের পরিস্থিতি লক্ষ্য করে আমার যা মনে হচ্ছে তাতে ভোটের ফলে পার্লামেন্ট অচল হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। এতে করে ব্রেক্সিট না হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হবে।”