৯০’র দশকে ইসরায়েলের জ্বালানিমন্ত্রী ছিলেন সেগেভ। নাইজেরিয়ায় চিকিৎসক হিসেবে কাজ করার সময় তিনি ইরানের গোয়েন্দা সংস্থায় নিয়োগ পান।
বিবিসি জানায়, তিনি ইসরায়েলের কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা ক্ষেত্র সম্পর্কে তথ্য পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন।
গত বছর মে মাসে মধ্য আফ্রিকার দেশ ইকুয়েটোরিয়াল গিনি পুলিশ সেগেভকে (৬৩) আটক করে এবং তাকে ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করে।
মারাত্মক গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তিনি কৌসুলিদের কাছে দোষ স্বীকার করেছেন। আগামী ১১ ফেব্রুযায়ী আদালতের শুনানিতে আনুষ্ঠানিকভাবে তার সাজা ঘোষণা করা হবে। এ ব্যাপারে ইরান কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
সেগেভ এবারই প্রথম কারাগারে যাচ্ছেন না। এর আগে ২০০৫ সালে নেদারল্যান্ডস থেকে ৩০ হাজার ‘উত্তেজনা বর্ধক বড়ি’ ইসরায়েলে পাচারের চেষ্টা করার অভিযোগে দোষীসাব্যস্ত করে সেগেভকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তিনি মেয়াদউত্তীর্ণ কূটনৈতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করে ওই মাদক পাচারের চেষ্টা করেছিলেন।
সেবার চিকিৎসক হিসেবে তার লাইসেন্সও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০০৭ সালে কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি নাইজেরিয়া চলে যান এবং সেখানে আবারও চিকিৎসক হিসেবে কাজ করার অনুমতি পান।
গত জুনে ইসরায়েলের অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা সংস্থার কর্মকর্তা শিন বেট বলেছিলেন, সেগেভ ২০১২ সালে নাইজেরিয়ায় বসবাসের সময় ইরানি দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এমনকি তিনি গুপ্তচরবৃত্তির জন্য তাকে ভাড়া করা ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করতে দুইবার ইরানেও গিয়েছিলেন।
“তাকে দেওয়া একটি গোপন যোগাযোগ ব্যবস্থার সাহায্যে তিনি কোড বার্তা এবং ইসরায়েলের জ্বালানি, নিরাপত্তা ক্ষেত্র রাজনৈতিক কর্মকর্তা এবং নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তথ্য পাচার করতেন।”
১৯৭৯ সালে ইসলামিক বিপ্লবের মাধ্যমে ইরানে কট্টরপন্থি মুসলমান শাসকদের শাসন শুরু হয়। ইরানের নেতারা মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের অস্তিত্বকে অস্বীকার করেন এবং দেশটিকে বিনাশ করে দেওয়ার আহ্বান জানান। তাদের দাবি, ইসরায়েল অবৈধভাবে মুসলমানদের ভূমি দখল করেছে।
সেগেভ গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ স্বীকার করলেও একাজ তিনি ‘ইরানকে বোকা বানিয়ে নায়ক হিসেবে দেশে ফেরার জন্য’ করেছিলেন বলে তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে দাবি করেছেন।
গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে সেগেভকে দোষীসাব্যস্ত করার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েল কর্তৃপক্ষের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।