সৌদি তরুণী রাহাফকে অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় দেওয়ার সুপারিশ জাতিসংঘের

পরিবারের কাছ থেকে পালিয়ে ব্যাংককে গিয়ে বিমানবন্দরে অবস্থান নেওয়া সৌদি তরুণী রাহাফ মোহাম্মদ মুতলাক আল-কুনুনকে শরণার্থীর মর্যাদা দিয়েছে জাতিসংঘ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Jan 2019, 09:15 AM
Updated : 13 Jan 2019, 04:48 AM

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) রাহাফকে অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় দেওয়ার সুপারিশ করেছে।

এর জবাবে অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী তারা ইউএনএইচসিআরের সুপারিশের বিষয়টি বিবেচনা করবে। সরকারের তরফ থেকে এ বিষয়ে নতুন করে কোনো বক্তব্য দেওয়া হবে না।

বিবিসি লিখেছে, এমনিতে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকেই একজন ব্যক্তিকে শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে কোনো ক্ষেত্রে রাষ্ট্র অপারগ হলে বা অনাগ্রহী হলে  ইউএনএইচসিআরও কাউকে শরণার্থী ঘোষণা করতে পারে।

পরিবারের সঙ্গে কুয়েত ভ্রমণে থাকার সময় গত ৪ জানুয়ারি পালিয়ে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার চেষ্টা করেন ১৮ বছরের তরুণী রাহাফ। কুয়েত এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি ব্যাংকক বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখান থেকে তার অস্ট্রেলিয়ার ফ্লাইট ধরার কথা ছিল।

কিন্তু ব্যাংকক বিমানবন্দরে সৌদি আরবের একজন কূটনীতিক তার সঙ্গে দেখা করে তার পাসপোর্ট জব্দ করে বলে দাবি রাহাফের। জোর করে কুয়েতে ফেরত পাঠানো হতে পারে- এই আশঙ্কায় নিজের অবস্থার কথা বিশ্ববাসীকে জানাতে রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আশ্রয় নেন তিনি।

বিমানবন্দরের হোটেল কক্ষে বসে টুইটারে নিজের ও পাসপোর্টের ছবি দিয়ে রাহাফ বলেন, কুয়েতে পাঠানো হলে তার পরিবার তাকে সেখান থেকে সৌদি আরব নিয়ে গিয়ে হত্যা করবে।

ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করায় পরিবার তার ওপর ক্রুদ্ধ বলেও টুইটারে জানান এই তরুণী। সৌদি আইনে ধর্মত্যাগের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

থাইল্যান্ড বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ শুরুতে তাকে কুয়েত ফেরত পাঠাতে চেয়েছিল। সোমবার কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তাকে তুলে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাহাফ হোটেল কক্ষ ছাড়তে অস্বীকার করেন।

এরপর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তুমুল আলোচনার মধ্যে থাই অভিবাসন পুলিশ রাহাফকে ফেরত না পাঠিয়ে থাইল্যান্ডে প্রবেশের অনুমতি দেয়।

পরে ইউএনএইচসিআরের তত্ত্বাবধানে ব্যাংকক বিমানবন্দর ছাড়েন রাহাফ। বাবা ও ভাই থাইল্যান্ডে পৌঁছালেও তাদের সঙ্গে দেখা করতে রাজি হননি এই সৌদি তরুণী।

থাই কর্তৃপক্ষ সে সময় বলেছিল, ইউএনএইচসিআর রাহাফের বিষয়টি দেখবে এবং তার বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।

বিবিসি জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়া সরকার রাহাফকে আশ্রয় দিতে রাজি হতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী গ্রেইগ হান্টের কথায়।

এবিসি টেলিভিশনকে তিনি বলেছেন, রাহাফ শরণার্থীর মর্যাদা পেলে অস্ট্রেলিয়া সরকার তাকে ভিসা দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।